নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোটে জিতেও নেই রক্ষে। দল সামলাতে এখন নাকানিচোবানি খাচ্ছেন বীরভূমের দুবরাজপুর বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা। কেননা তাঁর এলাকার বিজেপি নেতারা দলে দলে গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পা বাড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁরা দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন। যা অবস্থা যে কোনও দিন হয়তো দেখা যাবে বীরভূমের বুকে দাঁড়িয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিতে। কেননা খবর সেই রকমই। যদিও এহেন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খারিজ করেছেন অনুপবাবু। কিন্তু সেখানে যারা দলের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তাঁরাই সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন পরিস্থিতি আর বিধায়কের হাতে নেই।
মঙ্গলবার দুবরাজপুরে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য-সহ মোট ৩০ জন পদাধিকারী দলের পদ ছেড়ে দিয়েছেন। সেই ঘটনা অনুপ সাহা অস্বীকারও করছেন না। কিন্তু তাঁর দাবি, বিক্ষুব্ধরা দলের পদ ছাড়লেও দল ছাড়ছেন না। যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা আলোচনার মাধ্যমেই মিটিয়ে ফেলা যাবে। জানা গিয়েছে, এদিন যারা দলের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে আছেন দুবরাজপুর টাউন বিজেপি সভাপতি সন্দীপ আগরওয়াল, টাউন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ আচার্য, দলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম রজক, দলের দুবরাজপুর বিধানসভার সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম মুখোপাধ্যায়, এবিষয়ে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য তথা বিধানসভা পর্যবেক্ষক প্রভাত চট্টোপাধ্যায় সহ এক ঝাঁক নেতা। সন্দেহ নেই দুবরাজপুরের বিজেপির সংগঠনে এদিনের ঘটনা বড়সড় ধাক্কা। কেননা একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলার মধ্যে একমাত্র দুবরাজপুরেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। জেলার বাকি ১০টি বিধানসভাতেই ফুটেছে ঘাসফুল।
এদিন পদত্যাগের ঘটনা নিয়ে দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা জানিয়েছেন, ‘পদ ছাড়লেও কেউ এখনও দল ছাড়েননি। আমরা সকলের সঙ্গে কথা বলব। আমাদের দল একটি সুশৃঙ্খলিত দল। কোনও একটি বিষয় নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আশা করছি মুখোমুখি আলোচনায় বসলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’ যদিও প্রভাত চট্টোপাধ্যায় সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলছেন। তাঁর দাবি, ‘বিজেপিতে কোনও সভ্য লোক থাকতে পারে না। বিজেপির কোনও নীতি নেই, উন্নয়নের কোনও পরিকল্পনা নেই। তাই আমরা একযোগে সকলে পদত্যাগ করলাম। আমরা পদ ও দল দুটোই ছেড়েছি।’ প্রভাতবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা না জানালেও তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘বিজেপির পদত্যাগকারীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, তৃণমূল সময় দিলে অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়ে তাঁরা দলের হয়ে কাজ করতে চান। আমরা তাঁদের কথা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। সেখান থেকে অনুমোদন এলেই এনারা তৃণমূলে যোগদান করবেন। আমরা তাঁদের তৃণমূলে স্বাগত জানাচ্ছি।’