নিজস্ব প্রতিনিধি: বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করা হয় সংসারের সমৃদ্ধির জন্য। কিন্তু সেই লক্ষ্মীপুজোর(Laxhmi Puja) দিনেই বাড়ির জীবন্ত লক্ষ্মীকে আগুনে পুড়িয়ে মারলেন শ্বশুর-শাশুড়ি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলার কাকদ্বীপের(Kakdwip) হারুউড পয়েন্ট উপকূল থানার প্রসাদপুরে(Prasadpur)। মৃত গৃহবধূর(Housewife) নাম শিউলি পাঁজা(২০)। ওই ঘটনায় রবিবার রাতেই আটক করা হয় শিউলির শ্বশুর-শাশুড়ি লক্ষ্মীকান্ত পাঁজা ও ঊর্মিলা পাঁজাকে। একইসঙ্গে যে ঘরে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে সেই ঘরটি তদন্তের জন্য সিল করে দেওয়া হয়েছে। এদিন ডায়মন্ডহারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। আগামিকাল এই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাবে পুলিশ। তার পরেই বোঝা যাবে এই গৃহবধূর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ।
জানা গিয়েছে, বছর ২ আগে নামখানার সাতমাইলের বাসিন্দা শিউলির সঙ্গে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় প্রসাদপুরের গুরুপদ পাঁজার। কাজের সূত্রে গুরুপদ থাকেন ভিন্রাজ্যে। শিউলির বাপের বাড়ির অভিযোগ, গুরুপদ বাড়িতে না থাকার সুযোগে তাঁদের মেয়ের ওপর দিনের পর দিন নির্যাতন চালিয়েছে লক্ষ্মীকান্ত ও ঊর্মিলা। এক সময় পরিস্থিতি এমন হয় যে বাধ্য হয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান শিউলি। লক্ষ্মীপুজোর দিনই শ্বশুরবাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি। তার পরেই এই কাণ্ড! অভিযোগ, প্রথম দফায় মারধর করে শিউলিকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে দেওয়া হয়। পরে তাঁর সারা গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় গুরুপদর বাবা-মা। শিউলির আর্ত চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে যান ওই বাড়িতে। তাঁরাই শিউলিকে উদ্ধার করে কাকদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁর শরীরের অধিকাংশ অংশই পুড়ে গিয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিউলিকে পরে ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রবিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় শিউলির।
এই ঘটনার জেরে স্থানীয় থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে এ বিষয়ে সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করেছে পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন, ‘ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতের শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর বাকি তদন্ত প্রক্রিয়া হবে।’ সূত্রে জানা গিয়েছে গোটা ঘটনায় শিউলির স্বামী গুরুপদর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।