নিজস্ব প্রতিনিধি: সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন নেতা। কিন্তু চাকরি কেউই পাননি। ফেরত পাননি টাকাও। এখন সেই নেতাই দিয়েছেন গা ঢাকা। আর তারপর রবি সকালে আমজনতা চড়াও হলেন তাঁর বাড়িতে। লাগিয়ে দিলেন তালাচাবি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর(South Dinajpur) জেলার বালুরঘাটে(Balurghat)। স্থানীয় কাউন্সিলরের উপস্থিতিতেই ওই নেতার বাড়িতে এদিন তালা মেরে দিয়েছেন প্রতারিত জনতা। জেলার সদর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলপুর যোগমায়া স্কুলপাড়া এলাকার এই ঘটনায় শহরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় ছুটে আসে বালুরঘাট থানার পুলিশ। তবে উর্দিধারীদের উপস্থিতিতেই ওই নেতার বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেন ক্ষুব্ধ মানুষেরা। একই সঙ্গে সেখানে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা।
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতার(Primary School Teacher) চাকরি দেওয়ার নাম করে বালুরঘাট ব্লকের নুনইল এলাকার বাসিন্দা পেশায় কৃষক নকুল মন্ডলের কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বিপ্লব মন্ডল নামে ওই নেতা। চককাশি এলাকার বাসিন্দা পেশায় এলআইসির এজেন্ট বিপ্লববাবু বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত। সেই বিপ্লবের বালুরঘাটের বাড়িতেই এদিন বিক্ষোভ দেখান নকুল মন্ডল ও তার পরিবারের লোকজন। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না বিপ্লববাবু। অভিযোগ তিনি দিন কয়েক আগেই নাকি গা ঢাকা দিয়েছেন। বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। নকুলের লোকজনদের সঙ্গে সেখানেই বচসা বাঁধে বিপ্লববাবুর স্ত্রীর। প্রতারিতদের পাশে দাঁড়িয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানায় এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারাও। সেই বচসা চলার মাঝেই একদল মহিলা বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালায়। খবর পেয়েই এলাকায় আসে বালুরঘাট থানার পুলিশ ও এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ সাহা। তাঁদের উপস্থিতিতেই অভিযুক্ত ওই নেতার বাড়ির গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন বাসিন্দারা। বের করে দেওয়া হয় বিপ্লববাবুর বৃদ্ধা মা ও তাঁর স্ত্রীকে। যদিও পুলিশ নেতার শিক্ষিকা স্ত্রীকে থানায় নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
নকুল মন্ডল ও তার মেয়ে ঋতু মন্ডলের দাবি, ৬ বছর হয়ে গেল জমি বিক্রি করে তাঁরা প্রাইমারির চাকরির জন্য সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বিপ্লবকে। কথা হয়েছিল ওই টাকার বিনিময়ে ঋতু মণ্ডলকে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পাইয়ে দেবেন বিপ্লব। কিন্তু কোনও চাকরিই পাননি ঋতু। নকুলের সঙ্গে বিপ্লবের সেই বোঝাপড়া তাঁরা আবার স্ট্যাম্প পেপারে(Stamp Paper) লিখিয়ে নিয়েছিলেন। এদিন তাঁরা সেই স্ট্যাম্প পেপার সঙ্গে এনেছিলেন। এখন তাঁদের একটাই দাবি, তাঁরা গরিব মানুষ। তাঁদের কষ্টের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু টাকা দেবে কে? যিনি টাকা নিয়েছেন তিনি তো গা ঢাকা দিয়েছেন। যদিও এদিন বিপ্লবের স্ত্রী দাবি করেছেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। বিপ্লব কোনও টাকা নেননি।