নিজস্ব প্রতিনিধি: বন্ধুর মামার বাড়ি গিয়েছিল সে রথের মেলা দেখতে। যখন বাড়ি ছেড়েছিল তখনও সব কিছু স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু শনি সকালে সে বাড়ি ফিরে দেখল ঘরের খাটে পড়ে আছে মায়ের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ। সেই শোকের পাশাপাশি আরও বড় ধাক্কা অপেক্ষা করছিল তার জন্য। কেননা সে শুনল তার বাবার হাতেই খুন(Murder) হয়ে গিয়েছে তার মা। ১৪ বছরের ছেলের পায়ের নীচের মাটি কার্যত এক ধাক্কায় সরে গেল তখনই। মা গিয়েছে মরে, বাবা চলল জেলে। চোখের সামনে বছর চোদ্দোর কিশোরের এখন ঘোর অন্ধকার। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে বীরভূম(Birbhum) জেলার রামপুরহাট(Rampurhat) মহকুমার নলহাটি(Nalhati) থানার ভদ্রপুর(Bhadrapur) গ্রামে। মৃত গৃহবধূর নাম গানেশ্বরী মণ্ডল(৩৩)। ঘটনার জেরে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর স্বামী প্রদীপ মণ্ডল। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে দাম্পত্য কলহের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা গিয়েছে, প্রায় ১৬ বছর আগে প্রদীপের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল গানেশ্বরীর। প্রদীপের আসল বাড়ি নলহাটি থানারই মকরমপুরে। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই গানেশ্বরীর সঙ্গে প্রদীপের মায়ের অশান্তি চরমে ওঠায় প্রদীপ ভদ্রপুরে নিজের বাড়ি তৈরি করে সেখানে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকতে শুরু করে। কিন্তু সেই বাড়ি বদলের পরেও প্রদীপ ও গানেশ্বরীর অশান্তি কমেনি। পাড়াপ্রতিবেশীদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে প্রদীপ ও গানেশ্বরীর দাম্পত্য কলহ চরম আকার নিয়েছিল। নিত্যদিন অশান্তি হত তাদের মধ্যে। প্রদীপ ও গানেশ্বরীর ১৪ বছরের ছেলে প্রদ্যুৎ তা স্বীকারও করেছে। শনিবার সকালে পাড়াপ্রতিবেশীরা দেখেন ঘরের খাটে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে গানেশ্বরীর দেহ। প্রদীপ নিজেই জানান, রাতের বেলায় তিনি নিজেই ঘুমন্ত স্ত্রীকে বিছানাতেই কুপিয়ে খুন করেছেন। পাড়া প্রতিবেশীরাই খবর দেন প্রদ্যুতকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নলহাটি থানার পুলিশ। তাঁরা দেহ উদ্ধার করে তা রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ ও হাস্পাতালে পাঠান তা ময়নাতদন্ত করার জন্য। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় প্রদীপবাবুকেও।