নিজস্ব প্রতিনিধি: রবি বিকালের টর্নেডো(Tornedo) উত্তরবঙ্গের(North Bengal) তিন শতাধিক মানুষের জীবন আমূল বদলে দিয়েছে। কেউ হারিয়েছেন স্বজন, কেউ হারিয়েছেন ঘরবাড়ি সর্বস্ব। গতকাল রাতেই উত্তরবঙ্গের সেই মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার চলে এলেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। এদিন অর্থাৎ সোমবার দুপুরে তিনি কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরা পৌঁছান। সেখানে বিমানবন্দর থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার মুখে তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। আর তখনই তিনি সরাসরি বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের(Sukanta Majumdar) নাম করে খোঁজ করেন, থুড়ি কটাক্ষ হানেন। কেন এই বিপর্যয়ে বিজেপির নেতারা ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে পারেনি তার কৈফিয়ত চান তিনি।
এদিন উত্তরবঙ্গে পৌঁছেই বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক নিশানা করেন বিজেপিকে। কাছাকাছি থেকেও কেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বিপর্যস্ত জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি পরিদর্শনে এলেন না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি, তৃণমূলের সেনাপতি জানালেন, কেন রাতেই তড়িঘড়ি কলকাতা থেকে জলপাইগুড়িতে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, ‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই সব জেলার আসনগুলিতে তো বিজেপি জিতেছিল। কিন্তু তাঁদের কাউকেই দেখা গেল না। সুকান্ত মজুমদার কোথায়? উনি তো কাছেই থাকেন। এখনও তাঁর সময় হল না ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দেখতে আসার?’ এ প্রসঙ্গেই অভিষেক জানান, কেন মুখ্যমন্ত্রী রাতেই উত্তরবঙ্গে চলে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘সকালে হাসপাতালে গেলে অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে। নানা প্রোটোকল থাকে। কাজে অসুবিধা হতে পারে। সেই জন্য উনি রাতে চলে এসেছেন। গ্রামে গিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির কথা বলতে। হাসপাতালে গিয়েছেন। তদারকি করেছেন।’
সোমবার জলপাইগুড়ির আসার সময় মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছিলেন, ‘ওঁর চার্টার্ড ফ্লাইট আছে, তাই উনি রাতে চলে গিয়েছেন। আমাদের সাধারণ বিমান, যখন সময় হবে, আমি যাব। রাজ্যপালও তেমন গিয়েছেন। আমি তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই, মাল নদীতে হড়পা বানের সময়ে যদি ওর এই তৎপরতা দেখতে পেতাম, তা হলে ভাল লাগত। তা হলে বুঝতাম আপনি রাজধর্ম করছেন, ভোটধর্ম করছেন না।’ শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জবাবও দিয়েছেন অভিষেক। তিনি এদিন বলেন, ‘‘ওর দাবি অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী নাকি এখানে ছবি তুলতে এসেছেন। তা হলে আমার প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী এলেন না কেন? উনিও তো ছবি তুলতে ভালবাসেন। ওর জঙ্গল সাফারি দেখেছি আমরা। ভুটান সফর দেখেছি। উনি আসতে পারতেন। ফোটোশুটের ব্যাপারে বিজেপির কথা না বলাই ভাল। প্রচারসর্বস্বতাই তো ওদের রাজনীতি। এ বার মানুষ এদের শিক্ষা দেবেন। উত্তরবঙ্গে ভোটে ভালো ফল না হলেও মুখ্যমন্ত্রী ছুটে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী রাতেই দুর্গতদের কাছে ছুটে গিয়েছেন। রাজনীতি করতে চাইলে সকালে আসতে পারতেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদের ঘর ভেঙেছে তাদের থাকার ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। ভোট দিলেও পরিষেবা পাবেন, না দিলেও পাবেন। আবাসের টাকা পেল এত ক্ষতি হতো না।’