নিজস্ব প্রতিনিধি: রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের(Raiganj Constituency) তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী(TMC Candidate) কৃষ্ণ কল্যানীর(Krishna Kalyani) সমর্থনে শনিবার দুপুরে উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখরের(Goyalpokhar) লোধন হাইস্কুলের মাঠে একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। সেই সভা থেকেই তিনি ছত্রে ছত্রে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন কেন্দ্রের শাসক দলকে। বিশেষ করে কেন্দ্রের এজেন্সিগুলি যেভাবে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে হেনস্থা করে চলেছে তা নিয়ে এদিন সরব হয়েছেন অভিষেক। এর আগে নির্বাচনী প্রচারে বেড়িয়ে অভিষেক এই ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেননি, যা তিনি এদিন করেছেন। যদিও তিনি এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রের এই এজেন্সিরাজের সামনে তিনি মাথা নত করবেন না। তাঁর দাবি, ‘আমাদের কম ভয় দেখায়নি। ইডি, সিবিআই। ঘর, পরিবার, মা-বাবা, বাচ্চা কাউকে ছাড়েনি। তবু মাথা উঁচু করে লড়ছি। দিল্লির কুকুর হয়ে থাকার থেকে বাংলার বাঘ হয়ে থাকব। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হয়ে বাঁচব।’
এদিন অভিষেক আমজনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শুক্রবার হয়েছে প্রথম দফার লোকসভা ভোট। তাতে তৃণমূল প্রার্থীরাই জিতছেন। জনজোয়ার যাত্রার সময়ও উত্তর দিনাজপুরে তিন দিন ছিলাম। আপনারা যাঁদের বলেছিলেন, তাঁদের পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড় করিয়েছিলাম। তাঁরা জিতেছেন। এ বার তিন লক্ষ ভোটে কৃষ্ণ কল্যাণীকে জেতাতে হবে। ২০২১ সালের বিধানসভা দেখুন। রায়গঞ্জের ৯টি আসনের মধ্যে সাতটিতে জিতেছে তৃণমূল। পরে কৃষ্ণ কল্যাণীও সঙ্গে যোগ দেন। এখন আট। এ সব আসনে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম জিতলে কার লাভ হত? কংগ্রেস গত পাঁচ বছরে কী করেছে? যেখানে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের লড়াই, তারা কি জবাব দিতে পারছে? গত পাঁচ বছরে এক জন বিজেপি কর্মীও কি দল ছেড়ে সিপিএম, কংগ্রেসে গিয়েছেন? এনআরসি নিয়ে বিজেপি যখন ধমকাচ্ছিল, তখন এক মাত্র দিদি এসে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কোনও কংগ্রেস নেতা আসেননি। ২৬ তারিখ মাথা উঁচু করে ভোট দিন। আমাদের প্রার্থী জেতার পর আপনাদের সেবা করবেন। কথা দিলাম। তিন লক্ষ ভোটে আমাদের জেতান। ৪ তারিখ ফল ঘোষণা। জুন মাসে এখানে আসব। আপনাদের সঙ্গে উদ্যাপন করব। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিজয় মিছিল করব। কথা দিলাম। সকলকে বলে গেলাম। কিন্তু সবাই ঠিক করে নিন, গরম বেশি পড়লেও ভোট দিন।’
কেন্দ্রকে নিশানা বানিয়ে তিনি বলেন, ‘১০ বছর আগে খাদ্য, জরুরি পণ্যের কী দাম ছিল, আর এখন কী হয়েছে। ১১০ টাকার চা পাতা এখন ২৮০ টাকা। এই হল ‘অচ্ছে দিন’। বিজেপি বলেছে, এখানে জিতলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে। আপনারা কি তা-ই চান? বিজেপির কোচবিহারের এক নেত্রী তা-ই বলেছেন। আপনাদের কী মত? তাঁদের জবাব দেওয়া উচিত নয় কি? আবাসের জন্য ৩ বছর ধরে আবেদন করেছেন আপনারা। শিলিগুড়িতে মোদি এসে কী বললেন, হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন আবাসের জন্য। হাতজোড় করে বলছি, পরের বার এলে কাগজ নিয়ে আসবেন, যে গত ৩ বছরে কত টাকা দিয়েছেন। ৩৬ দিন হয়ে গেছে, বিজেপির কোনও নেতা ১০ পয়সার হিসাব দিতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী কি কাগজ দেখাতে পেরেছেন, যে আপনাদের থেকে কাগজ চাইছেন? নিজে পারেননি। পারলে দেখান। তিনি শুধুই সাধারণ মানুষকে ভুলপথে চালনা করছেন। আপনারা ধমকানো বন্ধ করুন। বাংলাকে উত্তরপ্রদেশ ভাববেন না। গুজরাত ভাববেন না। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ভাববেন না। ২০২১ সালেও একই ভুল করেছিলেন। আপনাদের একটা ভোটই কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে ফেলে নতুন সরকার বসাতে পারে। আপনার একটা ভোটে অনেক দাম। পাঁচ বছরের গদ্দারির জবাব দিন।’