এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

আবারও নন্দকুমার মডেলে বাম-বিজেপি জোট সমবায়ের ভোটে

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজনীতির মাঠে যে মডেল বাংলার বুকে তৃণমূল(TMC) বিরোধীদের মনে আশার আলো জাগিয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, সেই মডেলই দেশজুড়ে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিল বামেদের। মডেলটির নাম ‘নন্দকুমার মডেল’(Nandakumar Model) যা কার্যত তৃণমূলের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বাম-বিজেপি আঁতাত। সেই মডেলের জেরেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অস্বস্তিতে পড়ে সিপিআই(এম)। সেই অস্বস্তি কাটাতে দলেরই ১২জন নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করার পথে হাঁটা দিয়েছিল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। এমনকি তাঁরা এটাও জানিয়েছিল এই ধরনের ঘটনা আবারও ঘটলে দল আবারও একই পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেই চোখ রাঙানিকে অগ্রাহ্য করেই আবারও নন্দকুমার মডেল উঠে এল সেই একই জেলার ময়দানে, মানে পূর্ব মেদিনীপুরের(Purba Midnapur) বুকে। আর সেটাও এল এমন একটা সময়ে যখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলের রাজ্য নেতৃত্বকে রীতিমত নির্দেশ পাঠিয়েছে যে ভাবে কমিটি গড়ে বিধানসভা, লোকসভা, পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করা হয়, সে ভাবেই সমবায় ভোটের জন্য ‘সঞ্চালনা’ কমিটি গড়তে হবে।

আরও পড়ুন সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্যেরও, বৈঠকে মন্তব্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

চলতি বছরের নভেম্বর মাসে সামনে এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক সদর মহকুমার নন্দকুমার ব্লকের বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের নির্বাচনে বাম(Left)-বিজেপি(BJP) জোটের বিষয়টি। দুই দলের আঞ্চলিক স্তরের নেতাদের সমর্থনে সেখানে গড়ে উঠেছিল ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’। সেউ মঞ্চের নামেই সমবায়ের ৬৩টি আসনে প্রার্থী দেয় তাঁরা। দেখা যায় ভোটে সব ক’টি আসবনেই জিতে গিয়েছেন তাঁরা। পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই আরও বেশ কিছু সমবায়ের নির্বাচনে দেখা যায় সেই বাম-বিজেপি জোট হয়েছিল। কিন্তু সেই সব নির্বাচনে ওই জোট জয়ী হয়নি। তারই মধ্যে নন্দকুমারে জোটের কারণে দলের ১২জন নেতাকর্মীকে দল থেকে বার করে দেয় সিপিএম। যদিও সেই সিদ্ধান্ত কোনও ছাপই ফেলেনি রাজ্য রাজনীতিতে। তার সব থেকে বড় প্রমাণ মেলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই চলতি মাসের প্রথমদিকে হয়ে যাওয়া মহিষাদল ব্লকের জগৎপুর শীতল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে। সেখানে আবারও নন্দকুমার মডেলে বাম-বিজেপি জোট গড়ে সমিতির ৬২টি আসনের ৫১টি আসনে জয়লাভ করে। তৃণমূল পেয়েছিল মাত্র ১১টি আসন। সেই সূত্রেই এটা পরিষ্কার আলিমুদ্দিন যতই লম্ফঝম্ফ করুক না কেন, বাস্তবে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাম-বিজেপি জোটের মহড়া সফল ভাবেই হয়ে চলেছে।

আরও পড়ুন অমিত শাহয়ের সঙ্গে বৈঠকে একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে সওয়াল মমতার

এই দাবি যে ভুল নয় তা আবারও সামনে এল নন্দীগ্রামের জেলায়। তমলুক সদর মহকুমার পাঁশকুড়া থানা এলাকার জিয়াখালি-হাতিশাল সমবায় নির্বাচনে সিপিএম এবং বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ছে। দেখা গিয়েছে, ৪২টি আসনের ওই নির্বাচনে যেখানে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীর নাম জমা পড়েছে, সেখানে সিপিএম সমর্থিত প্রার্থী নেই। আবার, সিপিএম সমর্থিতরা যেসব আসনে প্রার্থী দিয়েছেন, সেখানে বিজেপির সমর্থিতের প্রার্থী নেই। এতেই বিজেপি এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে আঁতাতের অভিযোগ করছে শাসকদল তৃণমূল। আগামিকালই এই সমবায়ে ভোট রয়েছে। সেখানকার ৪২টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ২০টি আসনে আর বামেরা ২২টি আসনে। অর্থাৎ তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের বিরুদ্ধে একের লড়াই, যে জোটের কথা বাম জমানায় বার বার তৃণমূলনেত্রী নিজে বলতেন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি সুজিত রায় জানিয়েছেন, ‘যে বাম-বিজেপি সমর্থিতেরা যেভাবে প্রার্থী দিয়েছেন, তা সমঝোতা ছাড়া আর কিছুই নয়। কোনও কোনও জায়গায় দুই দলের নেতারা এক সঙ্গে প্রচারে যাচ্ছেন বলেও খবর পাচ্ছি। রাজনৈতিক আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে কেবলমাত্র ব্যক্তি স্বার্থকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তারই পরিণতি এমন আঁতাত।’

আরও পড়ুন রেল উচ্ছেদ করতে চাইলে দিতে হবে পুনর্বাসন, শাহকে বার্তা মমতার

যদিও তৃণমূলের এই দাবিকে খারিজ করেছেন বাম নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি জানিয়েছেন, ‘হাতিশাল-জিয়াখালি নির্বাচনে যেখানে যেখানে আমাদের সাংগঠনিক ক্ষমতা রয়েছে, সে সব জায়গায় আমরা প্রার্থী দিয়েছি। যেখানে আমাদের সংগঠন দুর্বল সেখানে প্রার্থী দিতে পারিনি। বিজেপি আমাদের দলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য আমাদের প্রার্থী দেওয়া আসনগুলিতে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রার্থী দেয়নি। যাতে লোকে বলে আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু কোনও সমঝোতা হয়নি।’ আবার, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘এবার আমরা সমবায় নির্বাচনে প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। সব জায়গায় আমাদের শক্তি নেই। তাই প্রার্থী দিতে পারিনি। সিপিএমের সঙ্গে কোনও সমঝোতা হয়নি।’ কিন্তু দুই দলের তরফে যতই অস্বীকার করা হোক না আমজনতার কাছে বিশেষ বার্তা চলেই যাচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে।

আরও পড়ুন শাহী বৈঠকের আগেই বড় ধাক্কা বঙ্গ বিজেপিতে

এদিকে গত ৫ ডিসেম্বর দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দলের সর্ব ভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার উপস্থিতিতে বিশেষ একটি বৈঠক হয় বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে। সেই বৈঠকেই রাজ্য নেতৃত্বকে সমবায় ক্ষেত্রের ভোটের জন্যও ‘নির্বাচনী সঞ্চালনা কমিটি’ গড়তে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। সঙ্গে এটাও বলে দেওয়া হয় যে ওই কমিটি বিধানসভা বা পঞ্চায়েত ভোটের মতো সমবায় ভোটেরও দেখভাল করবে। ২০১১-এ রাজ্যের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের দু’বছর আগে থেকে স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটে বাম-বিরোধীরা জয় পেতে শুরু করেছিলেন। বিজেপির একাংশের দাবি, সমবায়ের মতো ক্ষেত্রে, যেখানে অনেক মানুষ জড়িত থাকেন, সেগুলিতে জয় পেলে, বড় ভোটে জনমত প্রভাবিত করা সহজ হয়। মেদিনীপুরের মাটিতে এখন কার্যত সেই সমবায়ের ভোটি হয়ে উঠেছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে বাম-বিজেপি জোটের পরীক্ষাগার।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

সরাসরি : শীতলখুচিতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ

প্রথম ২ ঘন্টাতেই কমিশনের কাছে ৩৭টি অভিযোগ তৃণমূলের

শুক্রে রাজ্য়ের তিন কেন্দ্রে ভোট, মোতায়েন ২৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ১৭০০০ পাতার চার্জশিট জমা ইডির

হাতির হানায় মৃতদের স্বজনেরা চাকরি পেয়ে মুগ্ধ মমতায়

‘বিচারপতির কলঙ্ক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গো ব্যাক’, পোস্টারে পোস্টারে ছয়লাপ ময়না

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর