নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরপাড়া: আগরপাড়াতে আট বছরের বালক ইন্তাজ হুসেনকে খুন করে প্রতিবেশী যুবক। শনিবার খড়দহ থানা পুলিশ প্রতিবেশী যুবক নুর হাসানকে গ্রেফতার করে। রবিবার ব্যারাকপুর আদালতে প্রতিবেশী যুবককে পুলিশ পেশ করলে তদন্তের স্বার্থে বিচারক তাকে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ধৃত যুবক আগরপাড়া নিউ লাইন এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ শে জানুয়ারি বিকেল থেকে আগরপাড়ার আট বছরের ইন্তাজ নিখোঁজ হয়ে যায়। সে রাতেই ইন্তাজের পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এরপর ৩’রা ফেব্রুয়ারি দুপুরে ইন্তাজের বাড়ি থেকে দেড়শ মিটার দূরে একটি বন্ধ কারখানার ভেতরের পুকুরে বালকের দেহ ভাসতে দেখে পুলিশ। প্রথম মৃতদেহটি ওই বালকের তিতা নাসিম সনাক্ত করে। মৃতদেহটি হাত বাধা ছিল মুখে কাপড় বোঝা অবস্থায় ছিল। মৃত উদ্ধার হওয়ার পর স্থানীয় মানুষজন ক্ষিপ্ত হয়ে বিটি রোড(B.T.Road) অবরোধ করে।
তারা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর পুলিশ তদন্তে নেমে ওই এলাকার বেশ কয়েকজনকে থানায় ডেকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেই জিজ্ঞাসাবাদে সূত্র ধরেই এক প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে পাওয়া বয়ান অনুযায়ী জালারকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ব্যারাকপুরের উপনগরপাল(DC) (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনাওয়ানে জানিয়েছেন, ৩০ শে জানুয়ারি প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখেছিলেন, ওই বন্ধ কারখানার পাঁচিলের একদিক থেকে আরেকদিকে ওই বালককে টেনে নিয়ে নামাচ্ছেন ধৃত যুবক। ওই যুবক মানসিক অস্থিরতার সমস্যায় রয়েছে। তার থেকেই পুরনো কিছু রাগের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে। জেরার মুখে ওই যুবক খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে জানা গিয়েছে। ইন্তাজ কে কারখানার ভেতরে এনে প্রথমে শাশ্রুত করে খুন করেছে তারপর জঙ্গলে পড়ে থাকা দড়ি দিয়ে ইন্তাজের হাত বাঁধে এরপর জামা খুলে সেটি ছিড়ে তার মুখে গুঁজে দিয়ে তারপর মৃতদেহটি পুকুরে ফেলে দেয়। পুলিশ ধৃত যুবককে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা বিষয়টি সরজেমিনে তদন্ত করেন। তদন্তে পুলিশ আরো জানতে পেরেছে ৩০ শে জানুয়ারির কয়েক দিন আগে ওই বালকের সঙ্গে ধৃত যুবকের বচসা হয়েছিল কারণ মৃত বালক রাস্তায় দেখলেই নানাভাবে ধৃত যুবককে বিরক্ত করত।
এ নিয়ে অনেকদিন ধরেই ওই বালকের উপরে রাগ ছিল ধৃত যুবকের। ওই ঝগড়ার পর আরো আক্রোশ বেড়ে গেছিল তার ওপর। ঘটনার দিন দুপুরে বৃষ্টির পরিত্যক্ত কারখানার সামনে ঘোরাঘুরি করছিল ধৃত যুবক। বিকালে সেখানে বালক ইন্তাজ আসতেই তাকে হাত ধরে টেনে ইস্রে পাচিলের ওপর থেকে বন্ধ কারখানার ভিতরে নিয়ে যায় ধৃত যুবক। ওই কারখানার ভিতরে অনেকে নেশা করতেন। কয়েকজন এই বিষয়টি দেখতে পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ওই এলাকার আশেপাশের সিসিটিভি(CCTV) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করে খরদা থানার পুলিশ। এরপর তাদের বয়ান মিলিয়ে শনিবার নিউ লাইন থেকে জালারকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার সঙ্গে আর কেউ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই খুনের ঘটনা ঘটানোর কয়েকদিন আগে ঝগড়ার জেরে আরোও এক প্রতিবেশীকে ধৃত যুবক ছুরি দিয়ে হামলা করেছিল বলেও পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে।