নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনাসহ নানাবিধ ভাইরাস সংক্রমণের ঠেলায় যাতে মাটি হয়ে না যায় শারদোৎসব তার জন্য শহরবাসীকে আগাম সচেতন করতে জলপাইগুড়ির পথে নামল দেবী দুর্গা। দেবীপক্ষের আগে জ্যান্ত দুর্গার আগমনে জোর হৈচৈ জলপাইগুড়ি শহর জুড়ে।
গত দু সপ্তাহ ধরে জলপাইগুড়িসহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রবল জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় আক্রান্ত প্রচুর শিশু। ইতিমধ্যেই এই অজানা জ্বর প্রাণ কেড়েছে বেশকিছু শিশুর। অন্যদিকে অজানা জ্বরের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন শিশুর দেহে করোনা সংক্রমণেরও খবর পাওয়া গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বক্তব্য, ‘বড়দের মাধ্যমে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে মাস্ক ব্যাবহারসহ সমস্ত কোভিড বিধি কঠোর ভাবে মেনে চললে তবেই শিশুদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমন ঠেকানো সম্ভব হবে।’ বিশেষজ্ঞদের এহেন বক্তব্য, ‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লাগাতার প্রচার করার পরেও সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ মাস্ক ব্যাবহার একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। মানা হচ্ছে না কোনও কোভিড বিধি।’
এই পরিস্থিতিতে মানুষকে ফের সচেতন করতে অভিনব কায়দায় প্রচার চালাল ‘গ্রীন জলপাইগুড়ি’ নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁরা তাদের সংগঠনের এক সদস্যকে দুর্গা সাজিয়ে জলপাইগুড়ি শহরজুড়ে মাস্কবিহীন মানুষের মধ্যে মাস্ক বিলি করে করোনাসহ নানাবিধ ভাইরাস ঘটিত রোগ ঠেকাতে সচেতনতা প্রচার করে। পূজোর আগে জ্যান্ত দুর্গাকে দেখতে রাস্তায় ভিড় উপচে পড়ে।
ওই সংগঠনের সদস্য যিনি দুর্গা সেজে রাস্তায় নেমেছিলেন সেই উদিতা ব্যানার্জী জানালেন, ‘মানুষ আবার মাস্ক ব্যাবহার করা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে করোনা আবার নতুন করে শুরু হচ্ছে। তাই মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছি। যেহেতু জলপাইগুড়িতে বাচ্চাদের করোনা আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া যাচ্ছে তাই গনেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতী এদের সাথে আনিনি। মানুষকে সচেতন করে ওদের নিয়ে আবার পূজোর সময় আসবো।’
ঘটনায় গ্রীন জলপাইগুড়ির সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাস বলেন, ‘স্কুল বন্ধ। ওরা বাড়িতেই থাকছে। তবুও এবার শিশুদের মধ্যে আক্রান্ত হবার প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। কারন বাড়ির বড়রা কোভিড বিধি মানছেন না। ফলে তাঁদের মাধ্যমে ছোটরা আক্রান্ত হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে পূজো মাটি হয়ে যাবে। তাই আমরা মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছি।’
ঘটনায় অভিজিৎ দাস নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘দেবী দুর্গা সাজিয়ে এইভাবে সচেতনতা প্রচার নজিরবিহীন। দারুন উদ্যোগ নিয়েছে এই সংস্থা। আশা করি এবার মানুষ সচেতন হবে।’