নিজস্ব প্রতিনিধি:প্রবল চাপে পড়েছেন অনুব্রত মণ্ডল । শুক্রবারই তাকে নিয়ে আসানসোল জেল থেকে থেকে রাজধানীর পথে রওনা দিতে হবে ইডিকে। কেষ্টকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছে জোর কদমে। আসানসোল সিবিআই আদালত ইতিমধ্যেই সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিয়েছে ইডিকে(ED)। এবারও অনুব্রতর পক্ষে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। ভোটের রাজনীতির জন্যই অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ব্যস্ততা বলে মন্তব্য করেন তিনি। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন কেষ্টকে এখন দিল্লি নিয়ে যাচ্ছে?
পঞ্চায়েত ভোট আসছে বলে? পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত বা লোকসভা ভোট অবধি, ওরা অনেককে গ্রেফতার করবে। যাতে ভোট যেভাবেই হোক দখলে নিতে পারে। এটাই ওরা করে। ওদের অভ্যাস।” গরু পাচার কাণ্ডে গত অগস্ট মাসে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই কেষ্টকে গ্রেফতার করলেও একটা সময়ের পর থেকে ইডি ও সিবিআইয়ের সাঁড়াশি চাপে পড়তে হয়কেষ্টকে। পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়ে ওঠে, ইডি কেষ্টকে দিল্লি নিয়ে যেতে চাইলে। প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে এ নিয়ে আদালতে টানাপোড়েন চলার পর অবশেষে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যেতে চলেছে ইডি। আর তা হতে পারে আগামিকাল শুক্রবারই।গত ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটে একমাত্র জেলা ছিল বীরভূম, যা ছিল বিরোধী শূন্য। বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিল, তাদের মনোনয়ন পর্যন্ত জমা দিতে দেননি অনুব্রত মণ্ডল(Anubrato Mondal)। শুধু পঞ্চায়েত কেন, যে কোনও ভোটেই ‘গুড় বাতাসা’, ‘চড়াম চড়াম’ দাওয়াইয়ে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত শাসকদলের ভোটের সেনাপতি হয়ে ছিলেন জেলায়। তাঁর ‘দুর্ভেদ্য গড়ে’ প্রবেশ মোটে সহজ ছিল না। এই প্রথম বোধহয় সে রীতিতে ছেদ পড়তে চলেছে।
পঞ্চায়েত ভোট মেরে কেটে আর দু’মাসের অপেক্ষা। অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হলে, কবে তিনি রাজ্যে ফিরবেন তা নিয়ে ধন্দে সবমহলই। এই আবহে কেষ্টর দিল্লিযাত্রা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে উঠে এল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ত্ব। যদিও এই প্রথমবার নয়, এর আগেও কেষ্টর পাশে থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন কেষ্টকে গ্রেফতার করা হল?বিপত্নীক’ কেষ্টর পাশে দাঁড়িয়ে মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “ছেলেটা গত দু’বছর কষ্ট পেয়েছে আমি জানি বলে তাই। ওর বউ ক্যানসারে মারা গেছে। প্রতিদিন কলকাতা আর বোলপুর করত। এমনকী গতবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ওর বউ হাসপাতালে ভর্তি। অপারেশন হচ্ছে। আমাকে একদিন কেষ্ট বলল, ‘দিদি জানো তো তোমার বউমা বলছে আমাকে দেখতে হবে না, যাও দলের কাজ কর’।”