নিজস্ব প্রতিনিধি: ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যবাসীর জন্য বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেইসব প্রকল্পে উপকৃত বাংলার(Bengal) কোটি কোটি মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে পটশিল্পীদের(Pat Chitra Shilpi) আর্থিক অবস্থারও বদল হয়েছে। সেই কৃতজ্ঞতায় মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের ছবি এঁকে পটের গান বাঁধলেন শিল্পীরা। প্রায় ৮৪ ইঞ্চি লম্বা পটচিত্র এঁকে ইতিমধ্যেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শিল্পী বাহাদুর চিত্রকর(Bahadur Chitrakar) ও তাঁর সহকর্মীরা। ‘কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, স্কুলের ছেলেমেয়েদের মুখে হাসি, কৃষকদের দিচ্ছে ক্ষতি, খুশি তো সবাই’— এই বয়ানে বেঁধেছেন গানও। দূর দুরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের গান শুনিয়ে তাঁদের মন জিতেছেন বাহাদুর। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুরও পটচিত্র এঁকেছেন ওই শিল্পী।
আরও পড়ুন গঙ্গা ভাঙন রোধে আগ্রহ দেখাল World Bank ও ADB
পটশিল্পীরা এক সময় তাঁদের আঁকা পটচিত্র নিয়ে গ্রামগঞ্জে লোকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে গান শুনিয়ে বেড়াতেন রোজগারের জন্য। তখন মূলত দেবদেবীর ছবিই আকতেন তাঁরা। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে পটের ধরন। সাক্ষরতা অভিযান থেকে কোভিড, নানা সচেতনতা প্রচারে ছবি এঁকে গান বেঁধেছেন পটশিল্পীরা। এখনও সেই ধারা বহন করে চলেছেন। পাশাপাশি, তাপপ্রবাহ নিয়ে প্রায় ১৬৫ ইঞ্চির রোলপট এঁকেছেন বাহাদুর। বৃক্ষচ্ছেদন থেকে শুরু করে কংক্রিটের অট্টালিকা বানানোর ফলে কীভাবে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ, তা ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। দিনে দিনে কীভাবে বাড়ছে ঊষ্ণায়ন, এর হাত থেকে বাঁচতে গেলে কী করতে হবে, তাও পটের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন শিল্পীরা। গানে ভাষায় শিল্পীরা বলছেন— ‘গ্রীষ্মে এই গরমেতে, তাপমাত্রা বেড়ে যায়। রৌদ্রের ঝলকেতে, অঙ্গ জ্বলে যায়। পুকুরঘাট, নদীনালা সব শুকিয়ে যায়। জীবজন্তু, পশুপাখি কোথায় আশ্রয় পায়?’ তাপপ্রবাহ থেকে কীভাবে সতর্কতা অবলম্বন করবেন, তাও বোঝানো হয়েছে গানের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন চলতি মাসের কলকাতার রাস্তায় ১০০ এসি বাস
সম্প্রতি ইউনেস্কো থেকে প্রতিনিধি দল এসে ঘুরে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার পিংলা(Pingla) ব্লকের পটের গ্রাম নয়াতে(Naya Village)। বাহাদুর চিত্রকরের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। বিশ্বের দরবারে এই পটচিত্র যাতে স্থান পায় সেই আর্জি বাহাদুর জানিয়েছেন ইউনেস্কো প্রতিনিধিদের কাছে। বাহাদুর জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে শিল্পীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সরকারের তরফে আয়োজন করা হচ্ছে পটের মেলার। তাই গত বছর থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়েই কাজ শুরু করি। পটচিত্রে ফুটিয়ে তুলি তাঁর বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প। বাহাদুরের সংযোজন, এই পট মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে পারলেই আমি খুশি।’