নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রায় ১০ মাস পর বালাসন সেতু(Balason Bridge) দিয়ে ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হতে যাচ্ছে। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি(Silliguri) শহরের পশ্চিম প্রান্তে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের(NH 31) ওপরে থাকা বালাসন সেতু দিয়ে চলতি মাস থেকেই ফের যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ফলে জাতীয় সড়কের যানজট অনেকটাই কমবে। সেই সঙ্গে ঘুরে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তিও কমবে। গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শিলিগুড়ি শহরের কান ঘেঁষে থাকা এই সেতু। শিলিগুড়ি শহর থেকে বাগডোগরা(Bagdogra) যেতে গেলে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরে এই সেতু পড়ে। কিন্তু গত বছরের অক্টোবর মাসের ২০ তারিখ প্রবল বৃষ্টির জেরে এই সেতুর পিলার বসে যায়। তার জেরে রাতারাতি এই সেতু দিয়ে ভারী যানবাহণ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। হালকা যানবাহণের ক্ষেত্রেও চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মনে করা হচ্ছে চলতি মাসেই স্বাধীনতা দিবসের সময় থেকেই এই সেতু দিয়ে আবারও যান চলাচল আগের মতোই করতে পারবে।
গত বছরের অক্টোবরে দিন দুইয়ের প্রবল বৃষ্টিতে বালাসন নদীতে তীব্র জলস্রোত নেমে এসেছিল ভূটানের পাহাড় থেকে। সেই জলস্রোতের ধাক্কায় বালাসন নদীর ওপর থাকা বালাসন সেতুতে একটি পিলার প্রায় ১ ফুট বসে গিয়েছিল। ফলে ওই সেতুটিও বিপজ্জনক অবস্থায় চলে যায়। যে কোনও মুহুর্তে ওই সেতু ভেঙে পড়তে পারে এই আশঙ্কায় ওই সেতুর ওপর দিয়ে সব রকমের যানবাহণ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এই সেতু দিয়েই ফাঁসিদেওয়া, নকশালবাড়ি, পানিট্যাংকি, ঘোষপুকুর, বাগডোগরা এলাকার কয়েক হাজার মানুষ শিলিগুড়ি শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। আবার দক্ষিণবঙ্গ সহ মালদা ও দুই দিনাজপুর এবং দেশের মূল অংশের সড়ক যোগাযোগ রক্ষিত হয় এই সেতুর মাধ্যমেই। স্বাভাবিক ভাবেই এই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব থেকে বড় সমস্যায় পড়েন কয়েক হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে সমস্ত রকমের ভারী যানবাহন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের সামনে দিয়ে এশিয়ান হাইওয়ে-২ হয়ে শিলিগুড়ি শহরে পাঠানো হচ্ছিল। এখনও সেই ব্যবস্থাই চলছে।
বালাসন সেতু বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি বেইলি ব্রিজ সেখানে চালু করা হয় চলতি বছরের প্রথম দিকে। তাতে অবশ্য ভোগান্তি কিছুটা কমে। সেই সঙ্গে বালাসন নদীর ওপর একটি ডাইভারশন তৈরি করা হয়েছিল ভারী যানবাহণের নদী পারাপার করার ক্ষেত্রে। কিন্তু, গত মাসে প্রবল বৃষ্টিতে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই ডাইভারশনও ভেসে যায়। ফলে শিলিগুড়ি শহরে যানজটও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় ২ কোটি টাকা দিয়ে মূল বালাসন সেতু সারানোর কাজ শুরু হয়। পূর্ত দফতর থেকেই সেই কাজ করা হয়। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, জুন মাস থেকে বসে যাওয়া পিলারটিকে মেরামত করার কাজ শুরু হয়। প্রযুক্তির সাহায্যে জ্যাক করে বসে যাওয়া পিলারটি আবার আগের জায়গায় তুলে আনা হয়েছে। এখন সেতুর ওপরিতলের সঙ্গে সেই পিলারটিকে যুক্ত করার কাজ চলছে। সেই কাজও প্রায় শেষের পথে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী ১৫ আগস্ট থেকে মূল বালাসন সেতু দিয়ে আগের মতোই সব যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে তার আগে বেইলি ব্রিজ খুলে নেওয়া হবে। ওই ব্রিজ খুলতে চারদিনের মতো সময় লাগবে। তখন এই রাস্তা দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হবে। বালাসন সেতু দিয়ে ফের পুর্ণদমে যানবাহন চলাচল শুরু করে দিলে শিলিগুড়ি শহরেও যানজট অনেকটাই কমবে।