নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকৃতির কোলে বেড়াতে গিয়ে প্রকৃতির রোষেই চিরকালের জন্য হারিয়ে গেলেন দক্ষিণ শহরতলির বারুইপুর(Baruipur) পুরসভার বাসিন্দা বর্ষা মুহুরি(Barsha Muhuri)। অমরনাথের(Amarnath) মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আর তা থেকে তৈরি হড়পা বান প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বর্ষার। রবিবার রাত রাত দেড়টা নাগাদ দিল্লি থেকে ইন্ডিগোর বিমানে কলকাতায় পৌঁছয় বর্ষার কফিনবন্দি দেহ। পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় হুইল চেয়ারে বসেই ফেরত এসেছেন বর্ষার মা নিবেদিতা মুহুরিও। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বর্ষার প্রতিবেশী উজ্জ্বল মিত্র। তিনি জানিয়েছেন, গত শুক্রবার হড়পা বানের সময় বর্ষা আর তাঁর মায়ের হাত ধরে রেখেছিলেন বর্ষার মামা সুব্রত চৌধুরী। কিন্তু সেই সময়েই পাথর গড়িয়ে আসায় মাকে বাঁচাতে যান বর্ষা। আর তখনই টাল সামলাতে না পেরে জলের তোড়ে ভেসে যান ২২ বছরের বর্ষা। চোখের সামনে মেয়ের এই মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি নিবেদিতা মুহুরি। কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। রবিবার রাতে কলকাতায় ফিরে নিকটজনদের পাশে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
রাত ৩টে নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে শববাহী গাড়ি রওনা দেয় বারুইপুরে চক্রবর্তী পাড়ার উদ্দেশে। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ বাড়িতে পৌঁছয় বর্ষার দেহ। সেখানে তখন হাজির ছিলেন আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীরা। এর পর বারুইপুর শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। গোটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন বারুইপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাস। বর্ষারা বেড়িয়েছিল অমরনাথ ও কাশ্মীর ভ্রমণে। আগামী ১৬ জুলাই তাঁদের ফেরার কথা ছিল বাড়িতে। তার পাঁচদিন আগেই সোম ভোরে কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি ফিরলেন বর্ষা। গত ১ জুলাই বর্ষার মা, মামা ও প্রতিবেশী-সহ ৭ জনের দলটি অমরনাথ রওনা দেয়। এখন বর্ষার মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁরাও। এদিকে সোমবার সকালেই সামনে এসেছে আরও একটি উদ্বেগের ঘটনা। অমরনাথ দর্শনে গিয়ে গত শুক্রবারের ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ(Missing) হয়ে গিয়েছেন সোদপুরের(Sodepur) এক পরিবারের ৩জন সদস্য। সম্পর্কে তাঁরা বাবা, মা ও ছেলে। সোদপুরের উত্তর নাটাগড়ের বাসিন্দা ব্যাঙ্ক কর্মী নারায়ণচন্দ্র দে, স্ত্রী রুমা ও ছেলে সাগরকে নিয়ে গত ৪ জুলাই অমরনাথ রওনা দেন। বৃহস্পতিবার শেষবার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁদের মেয়ের। শুক্রবার বিপর্যয়ের পর থেকে এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করা যায়নি ওই তিনজনের সঙ্গে।