নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতে মাত্র আর ঠিক ২দিন। তারপরেই কলকাতার(Kolkata) ধর্মতলায় বসতে চলেছে শাহি সভা। সেই সভা যাতে কোনওভাবেই ফ্লপ না হয় তার জন্য এবার জেলাওয়াড়ি লোক আনার টার্গেট বেঁধে দিল বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP) নেতৃত্ব। আদালতের(Calcutta High Court) নির্দেশে ধর্মতলা চত্বরে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সমাবেশের আয়োজন করার রাস্তা খুলে গিয়েছিল আগেই। তাই এখন জোরকদমে সেখানে সভা করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বাংলার পদ্মশিবির। তবে যে বিষয়টি তাঁদের ভাবাচ্ছে তা হল সভায় লোক ঠিক কত হবে, সেই বিষয়টি। তৃণমূলের(TMC) ২১ জুলাইয়ের সভার সঙ্গে পাঙ্গা নিতে গিয়ে কার্যত মুখ পোড়া দশা হয়েছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। কেননা ২১ জুলাইয়ে তৃণমূলের সভায় জনতার জনস্রোত এখন মিথে পরিণত হয়েছে। সেই মিথের ধারেকাছেও ২৯ নভেম্বরে ভিড় হবে কিনা সেটাই এখন প্রেস্টিজ ফাইট হয়ে দাঁড়িয়েছে পদ্মশিবিরে।
২৯ নভেম্বর কলকাতার ধর্মতলায় বিজেপি সভায় হাজির থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। সেই সভায় যদি ভালো ভিড় না হয় তাহলে বঙ্গ বিজেপির মুখ পুড়বে। তাই ভিড়ে ঠাসা সভার ব্যবস্থা করতে এবার ভিড়ের ‘লক্ষ্যমাত্রা’ বেঁধে দিল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। দলের একেকটি সাংগঠনিক জেলাকে ন্যূনতম ১০ হাজার লোক জোগাড়ের টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৪ লক্ষাধিক মানুষ যাতে সভায় থাকতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও দলেরই একাংশের সন্দেহ, যা টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে তার সিকি ভাগ লোক জোগাড় করতেও কালঘাম ছুটবে বিজেপি নেতাদের।
এখন বাংলার বুকে বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সংখ্যা ৪৩টি। যদি প্রত্যেক জেলাকে কমপক্ষে ১০ হাজার লোক নিয়ে অমিত শাহের সভায় আসতে বলা হয়, তাহলে সবমিলিয়ে সংখ্যাটি দাঁড়াবে চার লক্ষেরও বেশি। এটি আদৌ বাস্তবোচিত কি না, তানিয়েই প্রবল ধন্দে বিজেপি নেতারা। কারণ বাংলার মাটিতে বিজেপি এখন ক্রমশ প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হতে চলেছে। দল ছাড়ছেন সাংসদ থেকে বিধায়কেরা। দল ছাড়ছেন নেতা থেকে কর্মীরা। মুখ ঘোরাচ্ছেন সমর্থকেরা। দলের জেতা আসনও হারাতে হচ্ছে দলকে। এই অবস্থায় সাড়ে ৪ লক্ষ লোক কোন পথে আসবে, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।
এদিকে কলকাতার ধর্মতলায় বিজেপির সভা ঠেকাতে রাজ্য সরকার বা পুলিশ শেষপর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে যাবে কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শাহি সভার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে যেভাবে ২১ জুলাইয়ের সভা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারপর আর তাঁর দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া সমীচীন হবে কিনা সেটা ভাবাচ্ছে রাজ্যের আধিকারিকদেরও। একই সঙ্গে এই আইনি যুদ্ধে বিজেপি যে অতিরিক্ত মাইলেজ পেয়েছে সে নিয়ে দ্বিমত নেই শাসক দলের একাংশের নেতাদের মধ্যে। তাই নতুন করে সভা ঠেকাতে আদৌ কোনও মামলা সুপ্রিম কোর্টে করা হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।