নিজস্ব প্রতিনিধি: কত আশা ছিল, কত স্বপ্ন ছিল, বাংলায় বসে ছড়ি ঘোরানোর। কিন্তু সেই সব স্বপ্নে আর আশায় ছাই ঢেলে দিয়েছে বাংলার মানুষ। আর সেই প্রত্যাখানের ধাক্কায় বাংলা থেকেই নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে পদ্মপার্টি। নিত্যদিনই দল ছাড়ছেন নেতা থেকে কর্মীরা। দল ছাড়ছেন সাংসদ ও বিধায়কেরাও। এদিকে সামনেই পঞ্চায়েত ভোট(Panchayat Election)। সেখানে আবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কোনও খবরদারি খাটবে না। ভোট করাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাই সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর(Central force) দাপাদাপিও খাটবে না। তাঁরা কাউকে গুলি করেও মারতে পারবে না, কাউকে ভয় দেখিয়ে বুথে আসা ঠেকাতে পারবে না। জনসমর্থন তলানিতে। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোট হলে যদিও বা কেউ জেতে সে দলে কতদিন থাকবে এখন সেটা ভেবেই কাবু বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) নেতারা। তার থেকেও বড় কথা, দলের অন্দরেই বইছে ক্ষোভ বিক্ষোভের চোরা স্রোত। বিক্ষুব্ধরা দলের প্রার্থীকেই না হারিয়ে দেয় এমন আশঙ্কা ক্রমশ দানা বাঁধছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে।
বঙ্গ বিজেপির সূত্রে জানা গিয়েছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি যাদের প্রার্থী(Candidate) করবে তাঁদের কাছ থেকে রীতিমত মুচলেকা(Bond) আদায় করতে চাইছেন পদ্মপার্টির নেতারা। কেননা তাঁদের ধারনা হয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে জেতার পরে এদের অনেকেই দলত্যাগ করে তৃণমূলে চলে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দলের হাত থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতাটুকুও বেড়িয়ে যাবে। আর সেটা হলে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে কার্যত বেইজ্জত হবে দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্রের দাবি, সরাসরি লিখিত মুচলেকা আদায় করার চেষ্টা করা হবে প্রথমে। সেই জায়গায় সফল না হলে মৌখিক মুচলেকা আদায়ের চেষ্টা করা হবে। যদিও সেক্ষেত্রেও সন্দেহ রয়েছে আদৌ এই পদ্ধতি সফল হবে কিনা। একই সঙ্গে প্রশ্ন আছে আইনগত বিষয়েও। কেননা দেশে দলত্যাগ বিরোধী আইন থাকলেও ভোতের আগে প্রাত্থীর কাছ থেকে দল লিখিত বা মৌখিক মুচলেকা আদায় করতে পারবে এমন আইন কোথাও নেই। সেক্ষেত্রে বঙ্গ বিজেপির নেতারা মুচলেকা আদায়ের পথে হাঁটলে আইনি সমস্যায় জড়িয়ে যাবেন বলেই রাজ্যের আইনজীবী মহলের একাংশের অনুমান।
রবিবার বাংলার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বৈঠকে বসেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের রাজ্যে নেতৃত্বের পঞ্চায়েত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দিল্লির নেতারা। সেখানেই স্থির হয়েছে, প্রার্থী বাছাইয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে দলের আদি নেতা ও কর্মীদের। সব দলবদলুকে ঢালাও টিকিও দেওয়া যাবে না। সম্ভাব্য প্রার্থীদের অতীত ইতিহাস, স্থানীয় স্তরে ভাবমূর্তি খতিয়ে দেখা হবে টিকিট দেওয়ার আগে। একই সঙ্গে যে সব প্রার্থী জিতবেন বলে আগে থেকে অনুমান করা যেতে পারে তিনি যাতে জয়ের পরে দল ছাড়তে না পারেন সেই জন্য আগে থেকেই তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করতে হবে।