নিজস্ব প্রতিনিধি: বর্ধমান-দূর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা এবার বর্ধমান পুরসভার নতুন প্রশাসক হলেন। চিটফাণ্ড কাণ্ডে কয়েকদিন আগেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বর্ধমান পুরসভার প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায়। তার জায়গায় রাজ্য সরকার কাকে নিয়োগ করে তা নিয়ে বেশ চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই ভেবেছিলেন প্রণবের বিরধী গোষ্ঠীর মুখ হিসাবে পরিচিত স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাসকেই হয়তো রাজ্য সরকার বর্ধমান পুরসভার প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করবে। কিন্তু সেই হিসাব মেলেনি। রাজ্য সরকার এদিন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাজ সংঘমিতাকে বর্ধমান পুরসভার প্রশাসক পদে নিয়োগ করে নিরপেক্ষতার বার্তা দিল। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির সংঘমিতাকে প্রশাসক পদে বসিয়ে রাজ্য সরকার কার্যত স্বচ্ছ পুরপ্রশাসনেরই বার্তা দিল।
রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় সময়মতো পুরনির্বাচন হয়নি কোভিডের জন্য। পূর্ব বর্ধমান জেলার সদর শহর বর্ধমান পুরসভার ক্ষেত্রেও সেই একই ঘটনা ঘটেছে। নির্দিষ্ট সময়ে পুরভোট না হওয়ায় সেখানেও প্রশাসক বসানো হয়েছিল। প্রণব চট্টোপাধ্যায় সেই পদেই আসীন ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি সিবিআই তাঁকে চিটফাণ্ড কাণ্ডে গ্রেফতার করেছে। এবার তাঁর জায়গাতেই এলেন মমতাজ। রাজ্যের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী তথা রাজ্য বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার সৈয়দ আবুল মনসুর হাবিবুল্লাহ ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাকসুদা খাতুনের মেয়ে মমতাজ ছোট থেকেই রাজনৈতিক পরিবেশ বড় হওয়ার পাশাপাশি মেধাবী ছিলেন। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাইস্কুল ও কলকাতার ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়ের ছাত্রী মমতাজ কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। পরে পেশায় আইনজীবী ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এহেন পারিবারিক মহল থেকে উঠে আসা মমতাজকে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দুর্গাপুর বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। সেবারের নির্বাচনে মমতাজ জয়ী হলেও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি পরাস্ত হন। এবার তাঁকেই নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে বর্ধমান পুরসভায়।
দায়িত্ব পাওয়ার পরে এদিন মমতাজ জানিয়েছেন, ‘রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ এই গুরুদায়িত্ব অর্পণের জন্য। আগে যখন সাংসদ ছিলাম তখন আমাকে অনেকটা বড় এলাকা জুড়ে কাজ করতে হয়েছে। এখন বর্ধমান পুরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়েছিল। অনেক গুরু দায়িত্ব। আমি যথাসাধ্য তা করার চেষ্টা করব। আমজনতার দাবি যতটা সম্ভব মেটানোর চেষ্টা করব।’