নিজস্ব প্রতিনিধি: স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার এবার এক বড় সিদ্ধান্ত নিল। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর উত্তরবঙ্গের রাজবংশী(Rajbangshi) ভাষায় পরিচালিত ১৯৮টি প্রাথমিক স্কুলের জন্য ৩৯৪জন প্যারাটিচার ও ৩৯০জন নন টিচিং স্টাফ নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর জেলায় ছড়িয়ে থাকা রাজবংশী ভাষায় পরিচালিত প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষার মান যেমন উন্নত হতে চলেছে তেমনি স্কুলগুলি সরাসরি রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণেও থাকবে। সব থেকে বড় কথা রাজবংশীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজবংশী ভাষায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের যে দাবি তুলেছিল কার্যত তাও মান্যতা পেয়ে গেল রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে। জানা গিয়েছে প্যারাটিচার দেওয়া হবে মাসিক ১০ হাজার টাকার ভাতা ও নন টিচিং স্টাফদের দেওয়া হবে ৮ হাজার টাকা ভাতা।
উত্তরবঙ্গের(North Bengal) ৪-৫টি জেলায় রাজবংশীদের বেশ ভালই প্রভাব আছে। বিশেষ করে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুর জেলায়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সেই রাজবংশী ভোট গিয়েছিল বিজেপির(BJP) দখলে। যার জেরে উত্তরবঙ্গের ৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১টিতেও জয়লাভ করেনি তৃণমূল(TMC)। বরঞ্চ সেখানে ৭টি আসনে জিতে নজীর গড়ে বিজেপি। কার্যত এর পর থেকেই রাজবংশীদের সমস্যার সমাধান করার জন্য উঠে পড়ে লাগে রাজ্য সরকার। গঠিত হয় রাজবংশীদের জন্য পৃথক উন্নয়ন বোর্ডও। এর পাশাপাশি রাজবংশী ভাষায় পরিচালিত স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবিকেও গুরুত্ব দেয় রাজ্য সরকার। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দেখা যায় রাজবংশী ভোট পুরোটা না হলেও কিছুটা ফিরেছে তৃণমূলের ঝুলিতে। এরপরেই এদিন রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ভাষায় পরিচালিত ১৯৮টি প্রাথমিক স্কুলের জন্য ৩৯৪জন প্যারাটিচার ও ৩৯০জন নন টিচিং স্টাফ নিয়োগের। রাজ্যের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে যাতে তৃণমূল উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ভোট ফিরে পায় সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সেই লক্ষ্যপূরণ হয় কিনা তার আভাষ ২০২৩ এ পঞ্চায়েত নির্বাচনেই মিলবে।