নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য সরকারের কার্পণ্য নেই। যথাযথ ব্যবস্থা করা হয় নবান্ন(Nabanna) থেকে। জেলা প্রশাসনগুলিও সতর্ক থাকে। কিন্তু তারপরেও একাধিকবার দেখা গিয়েছে রাজ্য সরকারের পাঠানো ত্রাণ সামগ্রী দুর্গতদের কাছে না পৌঁছে তা চলে যাচ্ছে খোলাবাজারে বিক্রি হতে। আর তাতে শুধু যে রাজ্যের শাসক দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তাই নয়, রাজ্য সরকারকেও অস্বস্তিতে পড়তে হয়। এবার সেই ধরনের ঘটনা কাটিয়ে উঠতে অভিনব পন্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তে যে সব ত্রাণ বিলি করা হবে তাতে ত্রিপলের পাশাপাশি খাবার জলের প্যাকেট থেকে চিঁড়ে গুড়ের প্যাকেটেই থাকবে বিশ্ববাংলার লোগো(Biswabangla Logo)। ফলে ত্রাণের সামগ্রী চুরি করে বিক্রি করতে গেলেই বিপদে পড়বে চোরেরা। সাধারণ মানুষও সতর্ক হয়ে যাবে। বিশ্ববাংলার লোগো থাকলে খুব সহজেই বোঝা যাবে যে সেই সামগ্রী সরকারী ত্রাণের অংশ। ফলে যা বিনামূল্যে পাওয়ার কথা তা আর তখন কেউ দাম দিয়ে কিনবে না।
মে মাস এমনিতেই ঘূর্ণিঝড় প্রবণ। তারওপর ইদানিংকালে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছে। আগেকার মতো ধারাপাত এখন আর দেখা যাচ্ছে না। বরঞ্চ দেখা যাচ্ছে অল্প সময়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি। আর তার জেরে একাধিক জেলায় ঘটছে বন্যার ঘটনা। তারওপর তো আছে ঝড়ের প্রকোপ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকারের তরফে ত্রাণের যথাযথ ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তারপরেও অভিযোগ ওঠে দুর্গতরা ত্রাণ পাচ্ছেন না। বেশ কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে ঘুরপথে তা খোলাবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই ঘটনা ঠেকাতেই এবার রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ত্রিপল থেকে শুরু করে খাবার জলের প্যাকেট সব কিছুতেই থাকবে বিশ্ববাংলার লোগো। ফলে তা নিয়ে আর দুর্নীতি হবে না। কেউ তা করতে গেলেই মুহুর্তের মধ্যে ধরাও পড়বে।
এই বিষয়ে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান(Javed Khan) জানিয়েছেন, ‘আয়লা থেকে আম্ফান যশ থেকে বুলবুল, সবই তো মে মাসে আছড়ে পড়েছে। তাই দুর্যোগ মোকাবিলার সব সরঞ্জাম তৈরি রাখা হচ্ছে। ত্রিপল-সহ ত্রাণ সামগ্রীও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ত্রাণ সামগ্রী বণ্টন নিয়ে একাধিক দুর্নীতির(Corruption) অভিযোগ ওঠে। সেই পথ বন্ধ করতে এবার ত্রিপল-সহ সব ত্রাণ সামগ্রীতে বিশ্ব বাংলার লোগো দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যেই লোগো দেওয়া ত্রিপল তৈরি হয়ে যাবে। পৌঁছে যাবে রাজ্যের গুদামে। লোগো থাকলে কাঁথি পুরসভার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। হলেও দোষীরা সহজে ধরা পড়বে। বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ত্রাণ সামগ্রী বিলি করে। লোগো দেওয়া থাকলে সরকারি ত্রাণ সামগ্রীকে সেসবের থেকে আলাদা করা যাবে। রঙেও বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে। এতদিন ত্রাণের কাজে শুধু কালো রঙের সরকারি ত্রিপল ব্যবহার হত। এবার কালোর পাশাপাশি নীল ও হলুদ রঙের ত্রিপলও দেওয়া হবে।’