নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বুকে পা রেখেই ঝোড়ো ইনিংস শুরু করে দিয়েছেন মিস্টার উইন্টার। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলায় বেশ চালিয়েই খেলবেন মিস্টার উইন্টার। দেখা যাবে তাঁর ঝোড়ো ইনিংসও। ইতিমধ্যেই কলকাতার বুকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১৪ ডিগ্রির নীচে। বৃহস্পতিবার ভোরে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। আগামী কয়েক দিনে তা আরও নামবে বলেই আবহাওয়াবিদদের দাবি। একইসঙ্গে পাহাড়ের সান্দাকুফুতে চলতি সপ্তাহেই তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতার পাশাপাশি ব্যারাকপুর, কৃষ্ণনগর, পানাগড়, কাঁথি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, শান্তিনিকেতন, আসানসোলের মতো জেলার শহরগুলিতেও উত্তুরে হাওয়ার দাপটে পারদ নিম্নমুখী৷ বেশ কয়েকটি জেলায় পারদ ১২ ডিগ্রির আশপাশে রয়েছে এদিন। বিশেষ করে পশ্চিমের জেলাগুলিতে পারা পতন বেশি করে চোখে পড়ছে।
এ বছরে সময়মতো শীতের ইনিংস শুরু হলেও বঙ্গোপসাগের ঘনীভূত হওয়া নিম্নচাপের জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বেড়েছিল জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি। যার জেরে ধাক্কা খেয়েছিল শীতের ‘ব্যাটিং’। সেই প্রভাব কমতেই বেড়েছে ঠান্ডা। পারদপতন ঘটেছে কলকাতা সহ বাংলার জেলায় জেলায় কলকাতায় আগামী কয়েকদিনে আরও ২-৩ ডিগ্রি পারা পতন ঘটতে দেখা যাবে। নিম্নচাপের বাধা কাটতেই খোলা ময়দান পেয়ে গিয়েছে উত্তর-পশ্চিমের শুকনো ঠাণ্ডা বাতাস। সেটাই এখন হু হু করে ছু্টে আসছে পূর্ব ভারতে। আর তার হাত ধরেই নামছে পারদ। আবহাওয়াবিদদের দাবি, সাগর থেকে কিছুটা হলেও দূরে থাকার জন্য উত্তরবঙ্গের বাতাসে জলীয় বাষ্প কম মেলে। তাই সেখানে উত্তর-পশ্চিমী হাওয়ার ভেলকি বেশি দ্রুত দেখা যায়। এবারেও সেটাই হতে চলেছে। উত্তরবঙ্গের জেলায় শীতের আমেজ এখন ক্রমশ বাড়বে। তুলনায় দক্ষিণবঙ্গে তা বাড়বে ধাপে ধাপে। তবে এই উত্তর-পশ্চিমী হাওয়ায় ভর দিয়েই বাংলায় হাজির হয়েছে কুয়াশার জাল। কলকাতায় তো বতেই জেলায় জেলায় দেখা যাচ্ছে কুয়াশার দাপট। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কুয়াশা বেশ ঘন হয়ে দেখা দিতে শুরু করেছে। এখন এই কুয়াশার দাপট চলবে বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
তবে আবহাওয়াবিদরা এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, ২৩ ডিসেম্বর থেকে কিছুটা হলেও বদলাবে আবহাওয়া। সেই সময় শীতের স্থিতাবস্থা বজায় থাকলেও বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তার জেরে রাজ্যে ফের মেঘ ঢুকতে পারে। সঙ্গে বাড়বে তাপমাত্রাও। উপকূলবর্তী এলাকায় কয়েক পশলা বৃষ্টিও হতে পারে। । তবে তার আগে আগামী তিন চারদিন এরকমই শীতের আমেজ থাকবে। বড়দিনে তাপমাত্রার বিশাল কিছু পতন ঘটবে না। আকাশ সেই সময় মেঘলাই থাকতে পারে। তার জেরে দিনে ঠাণ্ডা লাগলেও রাতের দিকে গরম লাগবে। তবে তার পরে পরেই বাংলায় হানা দেবে শৈত্যপ্রবাহ। তার ধাক্কায় কলকাতায় তো বটেই রাজ্যের জেলায় জেলায় হু হু করে নামবে পারা। ভাঙবে পুরাতন সব রেকর্ড।