নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির দোহমনি ও নিউ ময়নাগুড়ি স্টেশনের মাঝে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। ইঞ্জিন-সহ লাইনচ্যুত হয়েছিল ১০টি কামরা। রেলের দাবি মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের এবং কমবেশী আহত শতাধিক। কিন্তু কেন ঘটল দুর্ঘটনা? এর পিছনে কারও গাফেলতি আছে কিনা জানতে তদন্ত করছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি-র অধীনে এক উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকমিটি। কিন্তু এরমধ্যেই দুর্ঘটনার কারণ এবং বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করল রেল। রিপোর্টে রয়েছে ঠিক কী ভাবে এই দুর্ঘটনা হয়েছিল এবং ঠিক কোন সময়ে হয়েছিল এবং কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, দুর্ঘটনা ঘটেছে বিকেল ৪.৫৫ মিনিটে। কিন্তু রেল কর্তাদের কাছে খবর পৌঁছয় বিকেল পাঁচটা নাগাদ। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, প্রথমিক তদন্ত অনুযায়ী ‘লোড’, ‘লোকো’ এবং ‘প্যান্টো’ (ট্রেনের সঙ্গে ওভারহেড তারের বিদ্যুৎ সংযোগ যা দিয়ে হয়) ভেঙে যেতে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি টের পান চালক। এরপরই তিনি ট্রেনটি নিয়ন্ত্রন করেন এবং থামিয়ে দেন। পরে চালক দেখতে পান ৪-৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে রিপোর্টে এও জানানো হয়েছে, পরে দেখা যায় বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ১০টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। রিপোর্টে এও উল্লেখ করা হয়েছে ইঞ্জিনের প্রথম দুটি চাকা লাইনে থাকলেও শেষের চাকাগুলি লাইনচ্যুত হয়েছে।
তবে প্রাথমিক রিপোর্টে ইঞ্জিনের সমস্যা নিয়ে বেশি কিছু বলা হয়নি। তবে দুর্ঘটনাগ্রস্থ ইঞ্জিন ও লোকো পাইলটের (ট্রেন চালক) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জানা যাচ্ছে, বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনে (WAP4) যে গুরুতর সমস্যা ছিল সেটা চালক আগেই টের পেয়েছিলেন। এই বিষয়ে তিনি জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে এসে স্টেশন-মাস্টারকে তা জানিয়েও ছিলেন। তার পর অপেক্ষা না করে তিনি ট্রেন নিয়ে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দেন। এর পরই দুর্ঘটনা ঘটে। আপাতত দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিকে নিউ দোমহনি স্টেশনের আলাদা করে রাখা হয়েছে।