নিজস্ব প্রতিনিধি: না সময়টা বড্ড খারাপ যাচ্ছে সত্যিই বিজেপির। বিজেপি বিধায়ককে গালাগালি করলেন গেরুয়া শিবিরের জেলা সভাপতির। মুর্শিদাবাদের এই ঘটনায় আবারও বড়সড় অস্বস্তির মুখে পড়ল বিজেপি শিবির। জেলায় জেলায় নিজেদের সদর দফতরের সামনেই বঙ্গ বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বের বিক্ষোভ। দলে পদ পেতে গেলে বিধায়ক-সাংসদকে দিতে হবে টাকা, এমন অভিযোগও উঠেছে মণ্ডল সভাপতির তরফ থেকে অভিযোগের তির জেলা সভাপতি- বিধায়ক- সাংসদের বিরুদ্ধে। এর আগে তোলা চেয়ে হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন এক বিজেপি নেতা। পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ বিজেপি নেতা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তুলে উপনির্বাচনের আগে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তারপর উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে বিজেপিতে ভাঙন। ধানতলা নাবালিকার রহস্য মৃত্যুতে পলিটিক্যাল মাইলেজ নেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছে ভাইরাল অডিওতে। তারপরেই নব্য- পুরাতন, দিলীপ- সুকান্ত দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। সামসেরগঞ্জের বিডিওকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি দিয়ে গ্রফতার হয়েছেন বিজেপি যুব মোর্চা শহর সহ সভাপতি মিলন ঘোষ। তারপরেই ফের প্রকাশ্যে এল এই গালাগালির ঘটনা। তাতেই চরম অস্বস্তিতে পদ্ম শিবির।
বৃহস্পতিবার ভাইরাল হয়েছে একটি অডিও। সেখানেই শোনা যাচ্ছে মুর্শিদাবাদের বিধায়কের (MLA) উদ্দেশ্যে গালাগালি দিচ্ছেন দলেরই জেলা সভাপতি। যদিও অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ডব্লু ডব্লু ডব্লু ডট এই মুহূর্তে ডট কম। অবশ্য জেলা সভাপতি অস্বীকার করেছেন এই অভিযোগ। তাঁর দাবি, তাঁর কন্ঠস্বর তাঁর নয় আদৌ। এডিট করে ওই সব কথা বসানো হয়েছে। এও বলেন, আসলে কথা হচ্ছিল এক কলেজের অধ্যাপকের সঙ্গে। বিজেপি (BJP) জেলা সভাপতি বলেন, ভয়েস এডিট করে দলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া অডিওতে শোনা গিয়েছে, বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার গালিগালাজ করছেন মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষের উদ্দেশ্যে। জেলা সভাপতির বক্তব্য, কলেজের অধ্যাপক জেলা সভাপতি হতে চেয়েছিলেন তা হননি বলে দলের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরী শংকর ছিলেন রাজ্য বিজেপির সম্পাদক । রাজ্য কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন আরও এক বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। তিনি বহরমপুরের বিধায়ক। জানা গিয়েছে, পদ ছেড়েছেন আরও এক সদস্য । আর রাজ্য কমিটি থেকে এই দুই বিধায়ক সহ সদস্যের পদত্যাগ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। তাও আবার পদত্যাগ করেছেন খোদ দলের রাজ্য সম্পাদক।
রীতিমত সাংবাদিক সম্মেলন করে পদত্যাগের কথা জানান গৌরী শংকর। তাঁর অভিযোগ, ৫১ জনের নাম পাঠানো হয়েছিল জেলা মণ্ডল সভাপতি পদের জন্য। তা থেকে কিছু না জানিয়েই বাদ দেওয়া হয়েছে ১৮ জনের নাম। শুধু তাই নয়, জেলা সভাপতি নিজের ঘনিষ্ঠদের নাম এই তালিকায় যুক্ত করেছেন, বলেও অভিযোগ করেন। এরপরে বলেন, এই নিয়ে বারবার রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হলেও তাঁরা কোনও পদক্ষেপ নেননি। সেই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েই রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা। তবে তিনি বলেন, এখনই বিজেপি দল ছাড়ছেন না তিনি। বিজেপি বিরোধীদের প্রশ্ন, তবে কি আপাতত বিধায়ক পদ ধরে রাখার জন্যই দলত্যাগ করলেন না গৌরী? অন্যদিকে, বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্র নিজেও ছেড়েছেন রাজ্য কমিটির সদস্যপদ। তাঁরও অভিযোগ, জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। ক্ষোভের কারণ, ওই জেলা মণ্ডল সভাপতি পদের জন্য নামের তালিকাকে কেন্দ্র করেই।
