নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা ভোটকে(General Election 2024) পাখির চোখ করে গোটা রাজ্যে বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) মণ্ডল কমিটিগুলি নিজ নিজ এলাকায় সভা করা শুরু করেছে। এক একটি সভার আয়োজন করতে রাজ্য নেতৃত্ব থেকে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে এক একটি মণ্ডল কমিটিকে। কিন্তু ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের(Dhupguri Bye Election 2023) ফলাফল সামনে আসার পর থেকেই দেখা যাচ্ছে ওই সব সভায় লোকই হচ্ছে না সেভাবে। কোথাও কোথাও ৩৫ থেকে ৫০ জনকে নিয়েই সভা সারতে হচ্ছে। যদিও গেরুয়া শিবিরের দাবি, প্রতিটি সভায় ভিড় উপচে পড়ছে। লোক দাঁড়াবার জায়গাও পাচ্ছে না। যদিও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়, আদিবাসী প্রভাবিত এলাকায় যে দলের সভায় ভিড় হচ্ছেই না সেটা মেনে নিচ্ছেন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ।
উনিশের লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে বিজেপি জিতেছিল ১৮টি আসন। রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে সেই সময় বিজেপি লিড(Lead) তুলেছিল ১২১টি কেন্দ্রে। রাজ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৪৮টি আসন। সেই হিসাবে বিজেপির কাছে মনে হয়েছিল তাঁরা একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জিতেই যাবে অনায়াসে। ১২১টি কেন্দ্রে তাঁরা তো লিড পেয়েই গিয়েছে, রাজ্যে সরকার গঠনের জন্য বাকি ২৭টি আসন তো বটেই ২০০’র বেশি আসনও তাঁরা পেয়ে যাবেন। আর সেই সূত্রেই শ্লোগান উঠেছিল, ‘আবকে বার ২০০ পার’। কিন্তু দেখা গেল ২০০ তো বহু দূরে। তার অর্ধেক, ১০০ আসনও জুটল না বিজেপির ভাগ্যে। মাত্র ৭৭ আসনেই দৌড় থেমে গেল বিজেপির। ১২১ থেকে কমে ৭৭। ২ বছরের মধ্যে ৪৪টি আসন হারিয়েছিল বিজেপি। এখন তো সেটা কমতে কমতে ৭০’র নীচে নেমে গিয়েছে প্রায়। এই অবস্থায় বঙ্গ বিজেপির সামনে অমিত শাহ(Amit Shah) ২৪’র যুদ্ধে ৩৫টি আসন দখলের টার্গেট ধরিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু পরিস্থিতি বলছে, ৩৫টি আসন তো বহু দূরের কথা, জেতা আসনেরও এক তৃতীয়াংশ বিজেপি দখল করতে পারে কিনা সেটাও কোটি টাকার প্রশ্ন।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছে, বাংলায় প্রতিটি মণ্ডল কমিটি কেন্দ্র সরকারের সাফল্য, নানা প্রকল্পগুলি মানুষের কাছে তুলে ধরতে সভা করবে। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির নেতাদের একাংশ স্বীকার করে নিচ্ছেন হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরে মণ্ডল কমিটিগুলির সভায় লোক হচ্ছেই না। তুলনায় কিছুটা লোক হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমায়, নদিয়া জেলার রানাঘাট ও কল্যাণী মহকুমায়, হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমায়, মালদা জেলার কিছু ব্লকে, দক্ষিণ দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ি জেলায়। লোক সেভাবে হচ্ছে না শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকায় এবং আলিপুরদুয়ার জেলাতেও। ভিড় দেখা যাচ্ছে কিছুটা হলেও পূর্ব মেদিনীপুর ও কোচবিহার জেলায়।