নিজস্ব প্রতিনিধি: সব কিছু ঠিক থাকলে আগামিকাল বাংলায়(Bengal) পা রাখতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। দেশের শাসকদল বিজেপির(BJP) নম্বর টু এই নেতা আগামিকাল দিল্লি থেকে কলকাতায়(Kolkata) এসে হেলিকপ্টার করে চলে যাবেন কেষ্টগড় বীরভূমের(Birbhum) বুকে। সেখানে জেলার সদর শহর সিউড়িতে(Suri) তিনি একটি সভা করবেন। সেই সভার পাল্টা কর্মসূচি এবার নিতে চলেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। আপাতত ঠিক হয়েছে আগামী সোমবার তৃণমূলের তরফে সিউড়িতেই একটি পাল্টা সভা করা হবে যেখানে দলের জেলা নেতৃত্বের পাশাপাশি থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন সুপ্রিমদ্বারে বড় জয় রাজ্যের, নিশীথকাণ্ডে স্থগিত CBI তদন্ত
অনুব্রতহীন(Anubrata Mondol) বীরভূমের বুকে এই প্রথম সভা করতে চলেছেন অমিত শাহ। সেখান থেকে তিনি কী বার্তা দেন সেদিকে সকলেই চেয়ে আছেন। রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাহ বঙ্গ বিজেপিকে বাড়তি কোনও অক্সিজেন দিতে পারেন কিনা সেদিকেও সকলে চেয়ে নিয়েছে। এই সভা ঘিরে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসলেও তাঁদের এখন ভাবাচ্ছে সভার ভিড় ঠিক মতন হবে কিনা তা নিয়ে। শাহের সভায় বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব ৫০ হাজার লোক জমায়েত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। কিন্তু বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই লক্ষ্য পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে গেরুয়া শিবির। কেননা এই চাঁদিফাটা গরমে কতজন সমর্থক আসবেন শাহের কথা শুনতে সেটাই ভাবাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের। তাইও ভিড়ে যাতে খামতি না থাকে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র বীরভূমের মানুষের ওপর ভরসা না রেখে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান থেকেও লোক আনার ব্যবস্থা করছে। এমনকি সভা ভরাতে ঝাড়খণ্ড থেকেও লোক নিয়ে যাওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন মানুষের দাবি মেনে কেলেঘাইয়ের ওপর নয়া সেতু গড়বে মমতার সরকার
এখনও পর্যন্ত শাহের যা কর্মসূচী তাতে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা থেকে শাহের কপ্টার গিয়ে নামবে সিউড়ির ইরিগেশন কলোনির মাঠে অস্থায়ী ভাবে তৈরি করা হেলিপ্যাডে। সেখান থেকে শাহ প্রথমে যাবেন সিউড়িতে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে। সেই কার্যালয়ের চত্বরে থাকা আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করবেন তিনি। সেখান থেকে শাহ যাবেন দলের নতুন জেলা পার্টি অফিস উদ্বোধন করতে। তারপর মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে সিউড়ির বেণীমাধব স্কুলমাঠের মঞ্চে উঠে দলীয় সভায় যোগ দেবেন তিনি। সেই সভায় শাহ ছাড়াও থাকবেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য ও জেলা বিজেপির প্রায় সব নেতারাই। সেই সভা সেরে শাহের কলকাতায় ফেরার কথা। কিন্তু শাহের এই কর্মসূচি নিয়েই এখন বিঁধতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল যা অস্বস্তি বাড়িয়েছে পদ্মশিবিরের।
আরও পড়ুন হাইকোর্টের রায়ের পরেও বাস ভাড়ায় নেই সুরাহা
কী বলছে তৃণমূল? জোপড়াফুলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘মাঠ ভরবে না আশঙ্কায় প্রচুর ছৌ-নাচ, আদিবাসী নাচের দল ভাড়া করা হয়েছে বলে শুনছি। মাঠ ভরাতে ভিন জেলা ভিন রাজ্য থেকে লোক আনা হচ্ছে। কিন্তু উনি এলেও ওদের দলের হাল যে ফিরবে না, সেটা মনে হয় তিনিও জানেন। সারাবছর মানুষের সঙ্গে না থেকে মাঝেমধ্যে এক-দু’টো সভা করলেই কী মানুষের সাথী হওয়া যায়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রত্যেকে সারা বছর মানুষের পাশে থাকে। তাই মানুষ আমাদের দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করছে। আর শুনছি ওদের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন হবে। কিন্তু ওই পার্টি অফিস অনেক আগে থেকে চলছে। সেখানে কত যে বৈঠক হল, তার ঠিক নেই। তার সঙ্গে ওদের নানা কর্মসূচিও ওই পার্টি অফিস থেকেই হয়। সেক্ষেত্রে আবার নতুন করে পার্টি অফিসটি উদ্বোধন করানোর কী অর্থ বুঝতে পারছি না। সবটাই ভাঁওতাবাজির অঙ্গ। এরা মানুষকে ভাঁওতা দেয়, দলের নেতাকর্মীদেরও ভাঁওতা দেয়। কিন্তু মানুষ ওদের ভাঁওতাবাজি ধরে ফেলেছে। তাই সভা করে যে বিশেষ লাভ হবে না সেটা পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল দেখলেই বেশ বুঝতে পারবেন। বীরভূমের সব গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি আর জেলা পরিষদ তৃণমূল দখল করবে। বিজেপি প্রার্থীই খুঁজে পাবে না। ভোটে কী লড়াই করবে!’