নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির(BJP) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠল পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার পাঁশকুড়ায়(Panshkura)। শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন যখন দোরগড়ায় এসে কড়া নাড়ছে ঠিক তখন নতুন করে পদ্মশিবিরের আদি-নব্য দ্বন্দ্বে আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে পাঁশকুড়া পুরসভার এক বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর-সহ চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে পদ্মপার্টি। আর সেই বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুপারিশেই। অন্তত এমনটাই অভিযোগ তোলা হয়েছে বহিষ্কৃত বিজেপি নেতাদের অনুগামীদের তরফে। যে ৪জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁরা হলেন, পাঁশকুড়া পুরসভার বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর সিন্টু সেনাপতি, বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার কনভেনার প্রতীক পাখিরা, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য উত্তম সেনা এবং বিজেপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি কৌশিক জানা।
গত ২৫ অগাস্ট পাঁশকুড়ায় বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে আক্রান্ত হয়েছিলেন দলেরই কয়েকজন নেতাকর্মী। ওই ঘটনায় দলের তৎকালীন কাউন্সিলর সিন্টু সেনাপতি-সহ সাত নেতার বিরুদ্ধে উঠেছিল হামলার অভিযোগ। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, তাঁদের মারধর করা হয়েছিল। বিষয়টি তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বকে জানান। তার জেরে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে হামলাকারীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিজেপির নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগেই বহিষ্কার করা হয়েছে দলেরই চার নেতাকে। বিজেপির এই আদি নব্য দ্বন্দ্বের জেরে ৪ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র(Soumen Mahapatra) বলেন, এটা বিজেপির আদি ও নব্যর লড়াই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে প্রবল, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। যদিও বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর সিন্টু সেনাপতি জানিয়েছেন, বহিষ্কারের কোনও চিঠি তিনি পাননি।
বহিষ্কৃত নেতাদের অনুগামীদের দাবি, শুভেন্দুর অনুগামীরা তাঁর হাত ধরে বিজেপিতে পা রেখেছেন। সেই সময় থেকেই যাবতীয় সমস্যার উদ্ভব। দলের আদি নেতাকর্মীদের কোনঠাসা করে নব্যরাই নিজেদের ইচ্ছামত দলকে চলাতে থাকে। তাঁর জেরে দলের আদি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। কিন্তু দলের রাজ্য নেতারা শুধুমাত্র শুভেন্দুকে ধরে রাখার জন্য তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা তো নেয়নি, উল্টে দলের আদি নেতাদেরই দল থেকে তাড়াবার পথ নিয়েছে। এর জেরে পাঁশকুড়ায় বিজেপি কার্যত মুছে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে।