নিজস্ব প্রতিনিধি: মণিপুরে ধসে মৃত্যু হওয়া বাংলার আরও দুই জওয়ানের দেহ ফিরল গ্রামে৷ রবিবার নিহত দুই জওয়ান মহিউদ্দিন শেখ এবং সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ গ্রামে পৌঁছয়৷ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মণিপুরের টুপুলে ভয়াবহ ধসে বাংলার বহু জওয়ানের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে এই দুই জওয়ানও ছিলেন।
ঈদে বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু ছুটি না পাওয়ায় আসতে পারেননি বাড়িতে। অবশেষে বাড়ি ফিরল নিহত জওয়ান মহিউদ্দিন শেখের কফিনবন্দি নিথর দেহ। নিহত জওয়ান মহিউদ্দিন শেখের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটের ঘোড়ারাস উত্তরপাড়ায়৷ রবিবার দুপুর ১টায় সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে মণিপুর থেকে মহিউদ্দিন শেখের মরদেহ আনা হয় কলকাতা বিমানবন্দরে৷ তারপর সেখান থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে কফিনবন্দি দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাটে ওই জওয়ানের গ্রামে। গ্রামে দেহ পৌছতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্য এবং গ্রামবাসীরা। তাঁর দেহ নিয়ে গাড়ি গ্রামে ঢোকার পর জাতীয় পতাকা হাতে মরদেহের পিছনে পিছনে হাঁটতে থাকেন গ্রামবাসীরা৷ রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থেকে এলাকার মানুষজন চোখের জলে বিদায় জানান।
অন্যদিকে মনিপুরে নিহত আরেক জওয়ান সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। বনগাঁর গোপালনগর থানার ব্যারাকপুর শ্রীপল্লী গ্রামে রবিবার তাঁর দেহ পৌঁছয়৷ এদিন তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত জওয়ানের স্ত্রী ও বাবা-মা। গ্রামবাসীরা চোখের জলে বিদায় জানান তাঁকে। এদিন নিহত জওয়ান সন্তুকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। গ্রামে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর নিহত জওয়ানের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বনগাঁ মহাশ্মশানে৷
বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মণিপুরের মণিপুরের নোনে জেলায় টুপুল রেল স্টেশনে রেললাইন পাতার কাজের সময় সেখানকার নিরাপত্তার কাজে কর্মরত ছিলেন জওয়ান সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায় ও শেখ মহিউদ্দিন। অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে সেই ধসের ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান এই দুই জওয়ান সহ অনেক জওয়ান। তারপর থেকে তল্লাশি শুরু করে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, অসম রাইফেলস ও টেরিটোরিয়াল আর্মির জওয়ানরা। প্রসঙ্গত ২০২১ সালের অগস্ট মাসে মণিপুরের নালে জেলায় বদলি হয় মহিউদ্দিনের৷ তিনি ১০৭ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের গোর্খা রেজিমেন্টের সদস্য ছিলেন৷ সেনাবাহিনীতে মহিউদ্দিনের মতো তাঁর ছোট ভাই মিয়াজুদ্দিনও কর্মরত৷