নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার পাশে থাকা নিউটাউনের বুকে চলতি বছরেই হয়ে গিয়েছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। এবার পালা বোলপুরের(Bolpur)। আগামী ১৭ জুন সেখানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘শিল্প সিনার্জি’(Industrial Synergy)। বীরভূম(Birbhum) ও মুর্শিদাবাদ জেলার ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের(MSME) বিকাশের জন্য এই শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বোলপুর শহরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে এই সম্মেলন বসবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তবে তাঁর বীরভূম জেলা সফর বা সেখানে কোনও প্রশাসনিক বৈঠকের কোনও সম্ভাবনা এখনও উঠে আসেনি। তিনি যদি ওই দিন বোলপুর যান তাহলে শুধু ওই শিল্প সম্মেলনেই অংশগ্রহণ করবেন।
বীরভূমের জেলা শাসক(DM) বিধান রায় জানিয়েছেন, ‘কুটিরশিল্পের ক্ষেত্রে বীরভূম একটি উল্লেখযোগ্য জেলা। সুতি, তসর সিল্ক, পাটের কাজ, মৃৎশিল্প ও টেরাকোটা, কাঠখোদাই সহ বিভিন্ন শিল্পের টানে মানুষ এখানে ভিড় করে। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদে সিল্ক, বালুচরি, তাঁত শিল্প, কাঁসা শিল্প, টেরাকোটা, শোলা সহ একাধিক শিল্প রয়েছে। দুই জেলার এইসব ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে লাগাতার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্প যেমন হ্যান্ডলুম, পাওয়ারলুম এবং রেশম কীট পালন রাজ্যের সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। এইসব ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা থাকায় এর উন্নয়ন ও বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজ্য সরকার গত কয়েকবছর ধরে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এই জেলায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে ৬৫০কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। এর মধ্যে পাঁচ-ছ’জন বিনিয়োগকারী কাজ শুরুও করে দিয়েছে। গত ২০জানুয়ারি এই সিনার্জির উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোভিডের বিধিনিষেধ বজায় থাকায় তা করা যায়নি। সেটাই আগামী ১৭জুন আয়োজিত হবে।’
বোলপুরের বুকে এই শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করেছে রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প দফতর। আগামী ১৭ জুনের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকুন বা না থাকুন সম্মেলনে থাকবেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা সহ উদ্যোগপতি ও বিভিন্ন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। জেলা শাসক জানিয়েছেন, ‘ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে বীরভূমের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। তাই জেলার কোথায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, কোথায় বস্ত্রশিল্পের পার্ক গড়ে তোলা যায় সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যেই জেলায় যেসব শিল্পপার্ক রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে সেগুলি যাতে আরও উন্নত করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। আবার জেলার বাটিক, ডোকরা, রেশম শিল্পকে হাতিয়ার করে আমরা বিভিন্ন জায়গায় মানুষের কর্মসংস্থান বাড়াতে চাইছি। স্বেই সব সম্ভাবনাকেই আমরা সম্মেলনে খতিয়ে দেখতে চাই। জেলায় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সহজে ঋণদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চলছে প্রশিক্ষণের কাজও। এবার উদ্যোগপতিদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্ব দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এই লক্ষ্যেই এই শিল্প সিনার্জির আয়োজন করা হচ্ছে।’