নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ইদানিং ফের সিএএ লাগু করার বিষয়টি নিয়ম করে পুরনির্বাচনের প্রচারে নেমে সামনে নিয়ে আসছেন। বোঝাতে চাইছেন পুরনির্বাচনেও সিএএ ইস্যু হয়ে উঠছে। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার চাক বা না চাক তাঁরা সিএএ লাগু করেই ছাড়বেন এই বাংলায়। সুকান্তের এই দাবি ঘিরে বঙ্গ রাজনীতি যখন ফের উত্তপ্ত হতে শুরু করে দিয়েছে ঠিক তখনই এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ বাংলার ছেলে আনীশ খানকে তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে খুন করার অভিযোগ উঠল জনা চারেক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে যারা শুক্রবার রাতে তাঁর বাড়িতে পুলিশের পোষাক পরে হাজির হয়েছিল। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার আমতা থানার সারদা গ্রামের খাঁ পাড়ায়।
২৮ বছরের আনীশ ছিলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখব হয়ে ওঠার পাশাপাশি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-বিরোধী আন্দোলনেরও অন্যতম মুখ হ্যে উঠেছিল। দিল্লিতে তাঁকে এই আন্দোলনে নিজের বক্তব্য পেশ করতে দেখা গিয়েছে একাধিকবার। পাশাপাশি উলুবেড়িয়া মহকুমা এলাকায় জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের সঙ্গেও যোগ ছিল আনীশের। কোভিডকালে ওই এলাকার একাধিক নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতাল রাজ্য সরকারের ঘোষিত প্যাকেজের বাইরে গিয়ে কোভিড আক্রান্তদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা টাকা বিল বাবদ আদায় করত। সেই ঘটনার প্রতিবাদেও আন্দোলনে নামে আনীশ। এহেন প্রতিবাদী মুখকে কে বা কারা কেন খুন করল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আনীশের দাদা,
শুক্রবার রাতে সাবির খান এদিন জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে চারজন পুলিশ কর্মী বন্দুক হাতে তাদের বাড়িতে আসে। তাদের মধ্যে এক-দু’জন সিভিক পুলিশও ছিল। নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেওয়ায় তাঁরা বাড়ির দরজা খুলে দেন। সেই সময় ওই পুলিশকর্মীরা জানান, বাগনান থানায় আনীশের নামে অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করতে এসেছে। এরপরেই তারা আনীশের ঘরে ঢুকে তাঁকে মারতে মারতে তিনতলার ছাদে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকেই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়! দ্রুত তারা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে গেলে আনীশের পরিবারের লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ঘটনার জেরে তদন্তে নেমেছে আমতা থানার পুলিশ। আর সেই তদন্তে নেমেই তাঁরা বিস্ফোরক তথ্য পেয়েছেন। জানা গিয়েছে হাওড়া জেলার কোনও থানাতেই আনীশের নামে কোনও অভিযোগই নেই। এমনকি হাওড়া জেলার কোনও থানা থেকেই কোনও পুলিশকেই আনীশের বাড়িতে পাঠানো হয়নি। আর তাতেই পরিষ্কার হয়েছে, পুলিশের পোষাকে দুষ্কৃতীরাই আদতে হানা দিয়েছিল আনীশের বাড়িতে। তাঁকে ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে খুন করার ঘটনাও কার্যত পূর্ব পরিকল্পিত।