নিজস্ব প্রতিনিধি: গরু পাচারের(Cattle Smuggling) মামলায় কেষ্ট(Anubrata Mondol) গিয়েছে সিবিআইয়ের জেলখানায়। আর তার পর থেকেই ভাটা চলছে বীরভূম(Birbhum) জুড়ে। এ ভাটা গাঙ্গের ভাটা নয়, এ ভাটা গরু কেনাবেচার ভাটা। তথ্য বলছে, কেষ্ট সিবিআইয়ের হেফাজতে যেতেই বীরভূম জুড়ে গরু কেনাবেচা অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে। বড় বড় গরু ব্যবসায়ীরা এখন জেলার গরু বিক্রির হাটগুলিতে হাজিরাই দিচ্ছেন না। তাই দেখা মিলছে না ভাল জাতের জার্সি গরু, জাঠ গরু, বোল্ডার গরুর। যাও বা দেশি গরুর দেখা মিলছে তার দাম আর আগের মতো চড়া হারে মিলছে না। কার্যত গোটা বীরভূম জেলাজুড়েই দাম কমেছে গরুর। তার জেরে মাথায় হাত পড়েছে গরু কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত পশুব্যবসায়ীদের।
গরু পাচার মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই(CBI)। আর সেই তদন্তের স্বার্থেই তাঁরা এখন গোটা বীরভূম জেলাজুড়ে যত গরু বেচাকেনার হাট আছে সেগুলি সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। সেই সব হাটে কারা কারা বড় ব্যবসায়ী আছেন সেটা যেমন খোঁজ নিচ্ছেন তাঁরা তেমনি খোঁজ নিচ্ছেন সেই সব ব্যবসায়ীদের মধ্যে কারা কারা কেষ্ট ঘনিষ্ঠ ছিলেন বা এই পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর সেই কারণেই অনেক ব্যবসায়ীই এখন বীরভূম ও আশেপাশের জেলাগুলির গরু কেনাবেচার হাটে আসাযাওয়া বন্ধ রেখেছেন। একই সঙ্গে অনেকেই গা ঢাকাও দিচ্ছেন। তার জেরে গরু বেচাকেনার জায়গায় কমেছে গরুর আমদানি থেকে তার কেনাবেচা। তাই তার দরও নেমে যাচ্ছে হু হু করে। এক সময় বীরভূমের ইলামবাজার(Illambazar) ও ময়ূরেশ্বর(Mayureshwar) হাটে এক একে দিন ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকার গরু কেবনাবেচা হত। কেষ্ট’র গ্রেফতারির পরে তা রাতারাতি ৩-৪ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
কয়েকমাস আগেও এই সব হাটে দুধেল গাই বিক্রি হত ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা দরে। এখন সেটাই নেমে গিয়েছে দেড়-২ হাজার টাকা দরে। বলদ আগে বিক্রি হত ৫ হাজারের আশেপাশে। সেটাই এখন নেমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজারে। জার্সি গরু বা জাঠ গরু কিংবা বোল্ডার গরু আগে বিক্রি হত দেড় দুই লাখে। এখন তা ৬০-৭০ হাজারে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেছে মোষেরও। ২ লাখের মোষ এখন ৬০ হাজারে বিক্রি হচ্ছে। সেই ধাক্কা লেগেছে রাজস্বেও। রাজ্য সরকারের কোষাগারেও এই সব হাট থেকে কম রাজস্ব আসছ। তবে সব থেকে বড় ঘটনা যে, এই সব হাটের ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা এখন জানাচ্ছেন, কেষ্ট’র জেরে বীরভূমের দুটি হাট কার্যত পাচারের হাটে পরিণত হয়েছিল। এখন সেই ছবিটা কিন্তু আবারও বদল হচ্ছে। হাট তার আগের গ্রামীণ চেহারায় ফিরে যাচ্ছে। স্বচ্ছ হচ্ছে। হয়তো সময় লাগবে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে, কিন্তু বীরভূমের হাট আবার আগের চেহারাতেই ফিরে যাবে। মানুষের আস্থা ফিরবে। আবার আগের মতো কম দামেই দেশি গরুই পাওয়া যাবে। মাফিয়ারাজ বন্ধ হবে।