নিজস্ব প্রতিনিধি: পড়াশোনার জন্য ইউক্রেনে থাকা সন্তানের নিরাপদে দেশে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুণছে কালিয়াগঞ্জের হরিহরপুর এলাকার বাগচী পরিবার। এই পরিবারের সন্তান সৌরভ বাগচী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ মেডিকেল কলেজের পড়ুয়া। গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশটির মাটিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে। রাজধানী কিভ শহরে রুশ বিমান হামলায় সেনা-সহ বেশ কিছু নাগরিক নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর কিভ শহরের একটি ব্যাঙ্কারে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া সৌরভ। এই খবর আসতেই সন্তানের জন্য রীতিমতো দুঃশ্চিতায় কালিয়াগঞ্জে সৌরভের বাবা, মা।
কালিয়াগঞ্জ শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হরিহরপুর মোড়ে বাড়ির সামনে হোটেল চালান সৌরভের বাবা নীতিশ বাগচী। যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ২০১৬ সালে মেডিকেল পড়তে ইউক্রেনে গেছে সৌরভ। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় পড়াশোনার পর্ব শেষ করে তাঁর পুত্রের দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে হঠাৎ করে দুই দেশের লড়াই শুরু হওয়াতে সব কিছু বদলে গেল। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার জেরে সন্তানের ভবিষ্যত এবং দেশে ফেরা নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটছে নীতিশবাবুদের।
অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের প্রত্যন্ত কাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাবন বিশ্বাস ও রেখা বিশ্বাসও ভীষণভাবে চিন্তিত। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বাবনবাবুর ছোট্ট একটি দোকান রয়েছে পার্শ্ববর্তী কাজীপাড়া বাজারে। মা রেখা বিশ্বাস বাড়ির কাজ সামলান। তাঁদের একমাত্র ছেলে আশিস ছোটবেলা থেকেই ভালো। আর তাই গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আজ থেকে বছর চারেক আগে আশিস ইউক্রেনে মেডিকেল নিয়ে পড়ার সুযোগ পায়। তারপর থেকে ইউক্রেনে রয়েছে সে। করোনার কারণে লকডাউনে বাড়িতে এসেছিল। দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের ইউক্রেনে পাড়ি জমায় আশিস। সূদূর ইউক্রেনে থাকলেও ফোনে নিয়মিত কথা বলতো মা-বাবার সঙ্গে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে অনেকেই আটকে পড়েছেন। আর ইউক্রেনের যুদ্ধের খবর দেখে ভয়ানক চিন্তিত তাঁর পরিবার।
আশিসের মা এখন নিজের সন্তানের মঙ্গল কামনায় বাড়ির কালী মন্দিরে দেবীর কাছে প্রার্থনা করছেন। মায়ের এখন একটাই প্রার্থনা ছেলে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসুক।
তাঁর বাবা বলেন, ‘ছেলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে রয়েছে তাই আমরা বেশ চিন্তায় আছি। যদিও ছেলে জানিয়েছে যেখানে আছে সেখানে নিরাপদেই আছে তবুও আমরা চাই ছেলে দ্রুত সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসুক’।