নিজস্ব প্রতিনিধি: দিনের পর দিন জাত তুলে অপমান থেকে শুরু করে লাগাতার মানসিক নির্যাতনের(Mental Torture) অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(Vidyasagar University) প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রারের(Registrar) বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগ তুলেছেন খোদ ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ডেপুটি রেজিস্ট্রার(Deputy Registrar)। শুধু অভিযোগ তোলাই নয়, তিনি এই ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) মামলাও দায়ের করেছেন। তবে যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে সেই রেজিস্ট্রারের দাবি, ‘অভিযোগগুলি সর্বৈব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’ যে ২জনকে ঘিরে এই ঘটনায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এখন সরগরম তাঁরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার অমল কুমার ভুঁইয়া। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর বেশ কিছুদিন ধরেই বনিবনা নেই জয়ন্তবাবু ও অমলবাবুর মধ্যে। তার মাঝেই এবার এই অভিযোগ।
আরও পড়ুন দিনের আলোয় Shootout at Nowapara, গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ী
অমলবাবুর অভিযোগ, গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁর ওপর নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। পদে পদে তাঁকে অপমান করা হচ্ছে। তিনি তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। প্রকাশ্যেই তাই জাতিবিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে তাঁর প্রতি বিরূপ আচরণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রাক্তন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেওয়ার পর থেকেই হেনস্তার মাত্রা দ্বিগুন করা হয়েছে। দিনের পর দিন জাত তুলে অপমান থেকে শুরু করে লাগাতার মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে তাঁকে। আর সেটা করছেন জয়ন্তবাবু। এখন তাঁর দেখাদেখি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনান্য কর্তারাও এখন তাঁকে জাত তুলে অপমান করছেন। বাধ্য হয়ে তাই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন এবং কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক বিভিন্ন মহলেও অভিযোগ পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর সেই সব অভিযোগের জেরে এক ডিএসপির নেতৃত্বে শুরু হয়ে গিয়েছে পুলিশি তদন্তও।
আরও পড়ুন প্রাইভেট টিউশন পড়ানো স্কুলশিক্ষকদের তালিকা তৈরির পথে রাজ্য
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আধিকারিক হিসেবে বেশ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অমলবাবুকে। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। বিষয়টি গিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকেও। সেই বৈঠকে অমলবাবুর আবেদনকে বাতিল করে দেওয়া হয় বলেই খবর। যদিও অমলবাবুর দাবি, তাঁর দায়িত্ব নিতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তাঁর মতো একজন সিনিয়র আধিকারিককে কোনও সম্মান দেওয়া হয়নি। কোনও কাজ নিয়ে রেজিস্ট্রারের চেম্বারে ঢুকলে তিনি চেয়ারে বসতে পর্যন্ত বলেন না। উলটে জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য থেকে শুরু করে নানা ছুতোয় অপমান করতে থাকেন। দিনের পর দিন বিষয়টি সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই ন্যায় বিচারের আশায় শেষমেশ পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে একদমই মুখ খুলতে চাইছে না।