নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আজ বৃহস্পতিবার কৌশিকী অমাবস্যা। ভোর ৪.৩২ থেকে শুরু হয়েছে এই তিথি। অমাবস্যার তিথি চলবে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬.৩৯ মিনিট পর্যন্ত ।সেই উপলক্ষ্যে তারাপীঠে ভক্তদের ঢল নেমেছে। ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মত। ভোরবেলা শিলামূর্তি স্নান করিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে মাকে। বৃহস্পতিবার রাতভর ভক্তদের উদ্দেশ্যে মন্দির খোলা থাকবে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতে তারাপীঠের মহাশ্মশানে তন্ত্র সাধনা করতে আসেন বহু তন্ত্রসাধক । মহাশ্মশানে জ্বলে ওঠে হাজারে হাজারে হোমকুণ্ড । মা তারার দর্শন পেতে এবং সাধনায় সিদ্ধিলাভ পাওয়ার আশায় তারাপীঠে এসে ভিড় জমান তন্ত্রসাধক থেকে সাধারণ পুণ্যার্থীরাও । তারাপীঠে আসা পুণ্যার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে মা তারার মন্দিরে পুজো দিতে পারেন তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ ও তারাপীঠ মন্দির কমিটি । তারাপীঠ মন্দিরের প্রবেশ পথগুলিতে বসানো হচ্ছে মেটাল ডিটেক্টর গেট ।
নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে মোতায়েন করা হয়েছে ১ হাজার পুলিশকর্মী ও ১৭০০ সিভিক ভলেন্টিয়ার। ড্রোন, পর্যাপ্ত পরিমাণে সিসিটিভি, ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। বুধবার(১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টো থেকে তারাপীঠে চারচাকার গাড়ি ঢোকানো বন্ধ রাখা হয়েছে। সকলে যাতে ঠিকভাবে পুজো দিতে পারে মন্দির কমিটির তরফে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে। মন্দির কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা রয়েছে। আরও ১৫০ জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়ছে। করোনার পরে কোন বিধিনিষেধ ছাড়াই এবার কৌশিকী অমাবস্যার পুজো। ফলে এবার জনসমাগম চোখে পড়ার মত।
ইতিমধ্যেই তারাপীঠের হোটেল ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন । আবাসিকদের কাছ থেকে যাতে অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া না নেওয়া হয় তার জন্য হোটেল ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে । পাশাপাশি তারাপীঠে অলিতে গলিতে যাতে দমকল বাহিনীর গাড়ি যাতায়াত করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে । সেই মতো বুধবার দমকল বাহিনীর লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে তারাপীঠ মন্দিরের প্রধান রাস্তা গুলিতে অভিযান চালায় রামপুরহাট মহকুমা শাসক ও রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক । পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ ও জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগ থেকে পানীয় জলের পাউচ বিতরণ করা হবে ।
করোনাকালীন অনলাইনে পুজো দিয়ে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এখনও সেই ঘটনা ব্যতিক্রম নয়। তারাপীঠের তরফে অনলাইনে কোন পুজোর ব্যবস্থা নেই বলেই জানিয়েছিলেন তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়। সেই নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে।
কথিত আছে, সাধক বামাক্ষ্যাপা এই কৌশিকী অমাবস্যার দিনে সিদ্ধি লাভ করেছিলেন। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্যাপা এদিন তারা মায়ের আবির্ভাব পান। দশমহাবিদ্যার অন্যতম মহাবিদ্যাশক্তি হল আদ্যাশক্তি। সেই আদ্যাশক্তির আরাধনা করেন যারা, তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কৌশিকী অমাবস্যা। ভাদ্রমাসের এই তিথিতে তন্ত্রমতে ও শাস্ত্রের রীতি মেনেই কালীপুজো করা হয়ে থাকে। এই অমাবস্যা মেনে চললে জীবনে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায় বলে কথিত রয়েছে।