এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

বুনিয়াদপুরে এক বিবাহিত মহিলার জীবন যুদ্ধে করুণ লড়াই

নিজস্ব প্রতিনিধি,দক্ষিণ দিনাজপুর: শ্বশুরবাড়ির মানসিক অত্যাচার এবং অবহেলার প্রতিবাদে হাসপাতাল থেকে সদ্যজাত শিশুকন্যাকে নিয়ে সেই যে বাবার বাড়িতে চলে আসেন,আর শ্বশুরবাড়ি মুখো হন নি দিপালী দেবনাথ(৩২)(Dipali Debnath)।দিপালীর বাড়ি বলা ভালো কুঁড়ে ঘর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বড়াইলে। মেয়েকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে মুড়ি এবং চালভাজা বিক্রির পথ তিনি বেছে নিয়েছেন।প্রত্যেকদিন বুনিয়াদপুর(Buniadpur) ফুটবল মাঠের দৈনিক বাজারে গেলেই দেখা যাবে দিপালীকে মুড়ি বিক্রি করতে।

দিপালীর সংসার, মেয়ে মৌমিতা এবং বাবা- মাকে নিয়ে।রবিবার সকালে ফুটবল মাঠের বাজারে কথা হচ্ছিল দিপালীর সঙ্গে।তিনি বলেন,আজ থেকে প্রায় সতেরো বছর আগে আমার বিয়ে হয় হরিরামপুরে(Harirampur)।নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসার হওয়ায় নাবালিকা অবস্থায় বাবা গৌর দেবনাথ আমার বিয়ে দিয়ে দেয় হরিরামপুরের নিরঞ্জন দাসের সঙ্গে।বাবা অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাতেন।খুবই কষ্টের সংসার।ভেবেছিলাম শ্বশুর বাড়িতে একটু ভরপেট খেতে পারবো।সুখ পাবো।কিন্তু কোথায় কি।সেখানে সারাদিন বাড়ির কাজ করেও ভালোবাসা পেলাম না।কথায় কথায় গঞ্জনা এবং মানসিক অত্যাচার।এর মধ্যে সন্তান গর্ভে আসে।শত অত্যাচারেও মুখ বন্ধ করে থাকি।গর্ভ যন্ত্রনা নিয়ে হরিরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হই এবং কন্যা সন্তানের জন্ম দিই।হাসপাতাল থেকে সদ্যজাত কন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে সেই যে চলে আসি, আর যাই নি।

বাবার বাড়িতে থাকাকালীন বাবাই পরের জমিতে কাজ করে আমার এবং মেয়ের খরচ চালাতো।এখন মেয়ে বেশ বড় এবং ক্লাস টেনে পড়ে।কতদিন আর বাবার উপার্জনে মা মেয়ে খাবো।কিছু একটা করতে তো হবে।অনেক চিন্তা করে পাঁচ বছর আগে বাদাম এবং ছোলা ভাজার দোকান দিলাম।সে ব্যবসা করে জীবনে প্রথমবার উপার্জন করতে শিখলাম।পরবর্তীতে মাত্র দুই বছর আগে আমি চাল কিনে বাড়িতেই মুড়ি এবং চাল ভেজে বিক্রি শুরু করি।এই ব্যবসা একটু বড় হতেই আমাকে সাহার্য করা শুরু করলেন বাবা এবং মা।আজ আমি মুড়ি,চালভাজার সাথে মুড়কি এবং খইও বিক্রি করি।আমি মাকে নিয়ে হাটখোলার বাজারে দোকান করি। বাবাকে মুড়ি চালভাজা এবং খইয়ের সম্ভার দিয়ে বুনিয়াদপুর হাটখোলার ফুটপাতে দোকান করে দিয়েছি।আজ বাবা অন্যের জমিতে কাজ ছেড়ে দিয়েছে।এই ব্যবসা করে যেটুকু আয় হয়,তাতে আমাদের মা বেটি এবং বাবা মায়ের সংসার চলে যাচ্ছে।

আজ বুনিয়াদপুরের মতো জায়গায় তিন শতক জমির উপর টিনের বাড়িতে আমরা ভালোই আছি।মেয়ে আমার বংশীহারি গার্লস হাইস্কুলে(Banshihari Girl’s High School) দশম শ্রেণীতে পড়ছে।তার তিনটা টিউটরের বেতন, সংসার চালানোর খরচ এই মুড়ির ব্যবসার আয় থেকেই চলে।স্বামীর সংগে যোগাযোগ নেই প্রশ্নে তিনি বলেন,যে তার স্ত্রীকে তার মর্যাদা দেন নি এবং স্ত্রী মেয়ের খোঁজখবর এমনকি খরচ দেন না,তার সঙ্গে কিসের সম্পর্ক? তবে, বছরে এক দুইবার বুনিয়াদপুরে আসেন এবং আমাকে দূর থেকে দেখে চলে যান।আজ আমার মেয়েও তার বাবার কথা বলে না।তবে টাকা বেশী থাকলে ব্যবসাটা বড় করতে পারতাম।ঋন নিয়ে ব্যবসা বাড়ালেও সুদ তো দিতে হবে। যদি সুদ না দিতে পারি।সেই ভয়েই ঋন নিই নি।তবে,মহাজনরা ধারে চাল ধান দেন।সেই চাল ধান নিয়ে মুড়ি এবং খই ভেজে বিক্রি করি।এভাবেই বেশ চলে যাচ্ছে।সংসার করতে ইচ্ছা করে না প্রশ্নে ছলছল চোখে তিনি বলেন,জীবনে তো একবারই বিয়ে হয়।আর সেই বিয়েতে যখন সুখ পেলাম না,তো আর বিয়ে! এখন আমার একটাই স্বপ্ন।মেয়েকে শিক্ষিত করে ভালো ঘরে বিয়ে দেওয়া এবং একটা পাকা বাড়ি। যেখানে বাবা মাকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না এবং শান্তিতে ঘুমোতে পারবো বলেই দিপালী আঁচলে চোখ মোছেন।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

মালদায় বাজ পড়ে মৃত্যু ১১ জনের, শোকপ্রকাশ মমতার

শুক্রে  ঝাড়গ্রামে সভা মমতার, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করার ক্ষমতা নেই কারও, হুঙ্কার অভিষেকের

মালদায় আম কুড়োতে গিয়ে বজ্রপাতে মর্মান্তিক মৃত্যু ১১ জনের

‘২৬ হাজার ছেলেমেয়ে মুখ খুলছে না, পাছে সত্যিটা বেরিয়ে পড়ে’, সরব মমতা

‘ভুল খবর ছড়িয়েছে, এতে বিভ্রান্তি হচ্ছে’, INDIA জোট নিয়ে বড় বার্তা মমতার

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর