নিজস্ব প্রতিনিধি: সাদা, লাল, নীল বিশেষ কোনও রং নয়, পাঠ্যবইয়ের ছবি আঁকা হয়েছে স্কুলের দেওয়ালে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলার ফলতা(Falta) অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়কে(Primary School) এভাবেই সাজিয়ে তুলেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। করোনার দাপটে দীর্ঘ দু-বছর ধরে বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরই মাঝে মাস দুয়েকর জন্য স্কুল- কলেজ খোলা হলেও প্রাথমিকের দরজা বন্ধই থেকেছে। এখন আর করোনার প্রভাব নেই। স্বভাবতই আবার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে। প্রাথমিক স্কুল গুলিও এবার খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ দুবছর বাড়িতে থাকার পর শিশুরা আগের মতো আর স্কুল মুখী হচ্ছেনা। তাই শিশুদেরকে স্কুলমুখী করতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই সূত্রেই রঙিন হয়ে উঠেছে স্কুলের দেওয়াল(Colorful Wall)। ক্লাসরুমগুলির দেওয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাঠ্যবইয়ের নানা বিষয়।
ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘শিশুদের আরও বেশি করে স্কুলমুখী করতে আমারা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এতে শিশুরা বেশি স্কুলে আসতে আগ্রহী হবে। এরফলে পড়ুয়া সংখ্যা বাড়বে। তাতে আমাদের পড়াতে আরও ভালো লাগবে।’ এই স্কুলে পা রাখলেই দেখা যাবে স্কুলের দেওয়ালে টম অ্যান্ড জেরির কার্টুন আঁকা। এছাড়া সপ্তাহে কটা দিন, সেই দিনগুলির নামও লিখে রাখা হয়েছে দেওয়ালে ছবি সহযোগে। স্কুলের গোটা দেওয়াল ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভারতের মানচিত্রের ছবি। এখানেই শেষ নয় স্কুলের সিলিং আঁকা রয়েছে সূর্য, তারা, নক্ষত্র, সপ্তর্ষি মণ্ডলের ছবি।
ক্লাসরুমের ব্ল্যাকবোর্ডগুলি বিভিন্ন আকৃতির। কোনটা ঘর তো কোনটা আবার পতাকার আদলে। স্কুল চত্বর যেন ছোটখাট পার্ক। কারণ চারদিকে রয়েছে বাঘ, জিরাফ, ডলফিনের প্রতিকৃতি। সম্প্রতি সেখানে বসানো হয়েছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি। শিশুদের স্কুলে ফেরাতে ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সাধুবাদ জানানোর মতো কাজ। শিশুদের স্কুলমুখী করতে এমন অভিনব উদ্যোগের জন্য, ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় রাজ্য এবং জাতীয়স্তরে একাধিক পুরস্কারও পেয়েছে।