23ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 4:49 am
নিজস্ব প্রতিনিধি,ব্যান্ডেল: সোমবার ছিল পয়লা মাঘ। এই দিনে হুগলি জেলার দেবানন্দপুর – এ ব্যান্ডেলের কাছে একদিনের মাছের মেলা(Fish Fair) বসে। ভোর রাত থেকে বড় বড় মাছ নিয়ে আসে ।বিক্রি করতে আনা হয় ৩০ কিলো, ৪০ কিলো, ২০ কিলো সব ওজনের মাছ। এই মেলা প্রায় ৫১৬ বছরের কাছাকাছি পুরোনো। মেলার পাশে কৃষ্ণ মন্দিরকে(Krishna Temple) ঘিরে কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। অন্যান্য সামগ্রীর মেলা বসে এখানে।রাঘব বোয়াল থেকে চুনো পুটি,শুটকি কি না পাওয়া যায় এখানে।রুই, কাতলা, ইলিশ, ভেটকি, ভোলা ভেটকি,কাঁকড়া,শংকর মাছ, কি নেই এই মেলায়।সব ধরনের মাছ পাওয়া যায় ব্যান্ডেলের(Bandel) দেবানন্দপুরের কেষ্টপুরের মাছের মেলায়।
চুনোপুটি থেকে ৫০ কিলো পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয়।চৈতন্য মহা প্রভুর অন্যতম শিষ্য রঘুনাথ দাস গোস্বামী তার বাড়িতেই বসে ৫১৬ বছরের পুরানো মাছের মেলা।একদিনের এই মেলাকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন পসরা নিয়ে বসেন বিভিন্ন দোকানিরা।মেলার সূত্রপাত হয় গোবর্ধন গোস্বামীর ছেলে রঘুনাথ দাস গোস্বামী বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের পরই।ওই এলাকার জমিদার ছিলেন গোবর্ধন গোস্বামী।তারই ছেলে রঘুনাথ সংসার ত্যাগ করেন সন্ন্যাস নেবেন বলে।তিনি মহাপ্রভূ চৈতন্যের পারিষদ নিত্যানন্দের(Nitananda) কাছে দিক্ষা নেবেন বলে তার কাছে যান পানিহাটি তে।তবে তার বয়স তখন মাত্র ১৫ হওয়া তে তাকে তিনি দিক্ষা দেননি।তবে তার ভক্তির পরিক্ষা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন নিত্যানন্দ।দীর্ঘ ৯ মাস পর বাড়ি ফেরে সে।সেই আনন্দে বাবা গোবর্ধন গোস্বামী গ্রামের মানুষকে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।গ্রামের মানুষ তার ভক্তির পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কাঁচা আমের ঝোল ও ইলিশ মাছ খাওয়ার আবদার করে।
তিনি ভক্তদের বলেন বাড়ির পাশে আম গাছ থেকে জোড়া আম পেড়ে আনতে এবং পাশের জলাশয়ে জাল ফেলতে।সেই অনুযায়ী জাল ফেল তেই মেলে জোড়া ইলিশ ও আম আনতেই অবাক হয়ে যান গ্রামের মানুষ।তাই থেকে প্রতি বছর ভক্তরা রাধা গোবিন্দ মন্দিরে (Temple)পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মাছের মেলার আয়োজন করে।সেই থেকেই পয়লা মাঘ উত্তরায়ন মেলা চলে আসছে।দূর দূরান্ত থেকে বহু মাছ ব্যবসায়ী নদী পুকুর ছাড়াও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের পসরা নিয়ে বিক্রি করেন এখানে।হুগলি ছাড়াও বর্ধমান, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা,বাঁকুড়া থেকেও মানুষ এই মেলায় আসেন।৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি মাছ বিক্রি হয়।শুধু মাছ কিনেই নিয়ে যায় না, অনেকেই পাশের আম বাগানে মাছ ভেজে পিকনিকের আয়োজনও করেন।