নিজস্ব প্রতিনিধি,সন্দেশখালি: উত্তর ২৪ পরগনা বসিরহাট সন্দেশখালি ব্লকের বয়ারমারি এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শাঁকদাহ গ্রামে বিনা পয়সার ডাক্তার(Doctor)। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে বিনা পয়সায় প্রত্যন্ত সুন্দরবনের এলাকার সন্দেশখালীর মানুষের চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে আসছেন ডাক্তার ফারুক হোসেন। গ্রামের জলকর এলাকায় আলপথ ধরে যাওয়ার সময় দেখা গেল মানুষের স্রোত। মনে হলো তারা যেন কোনো তীর্থযাত্রায় যাচ্ছে। এক সময় মানুষের স্রোত গিয়ে মিলিত হলো একটি ছোট্ট স্কুল ঘরে। এ এক আরেক দৃশ্য। বাড়িভর্তি মানুষ। তারা ঘিরে আছে একজন ব্যক্তিকে।
জানা গেল, তিনিই সেই ডাক্তার। ডাক্তার ফারুক হোসেন(Dr. Fasruk Hossian)। বিনা পয়সায় মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ১০ বছর ধরে। এমবিবিএস পাশ ফারুক হোসেনের বাবা ছিলেন দিনমজুর তবুও দারিদ্রতাকে আঁকড়ে ধরে পড়াশোনায় ত্রুটি ছিল না তাঁর। তিনি জানান ছোটবেলা থেকে আমিও দরিদ্র পরিবার থেকে বড় হয়েছি।গ্রামের স্কুলে মাধ্যমিক পাশ করে বিনা বেতনে আল আমিন মিশনে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ২০১২ সালে বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাশ করেন তিনি। ২০০৯ সালে আয়লার ক্ষত নিয়ে বেড়ে উঠেছেন। বর্তমানে তিনি সফল চিকিৎসক। কিন্তু কৈশোরের দুঃখ কষ্টের কথা ভোলেননি। শুরু করেন মানব সেবার কাজ। সুন্দরবন অঞ্চলের সন্দেশখালির(Sandeshkhali) খাস-শাকদাহে শুরু করেন এলাকার মানুষের জন্য বিনা পয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘নব দিগন্ত’ সংস্থা। শুরু করেন নব দিগন্ত মিশন স্কুলে অনাথ অসহয় স্কুলছুট আদিবাসী ছেলেমেয়েদের জন্য নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠদান। আর সেই নব দিগন্ত মিশনেই সপ্তাহের প্রতি শনিবার চিকিৎসা পরিষেবা দেন। শুধুমাত্র চিকিৎসা পরিষেবা নয় ইসিজি, নেবুলাইজার, অক্সিজেনের পরিষেবার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধও দেন। করোনা পরিস্থিতিতেও সমানে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে এসেছেন। গ্রামের স্কুল কলেজের ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গ্রামের মানুষের বিনামূল্যে প্রেসার সুগার ইসিজি(ECG) মাপার কাজ শিখিয়েছেন। সুন্দরবন অঞ্চলের মেয়েদের স্যানেটারী ন্যাপকিনের ব্যবহারের জন্য সচেতন করেন। শুরু করেন বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়ার কাজ। ২০২১ সালে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ নাম ওঠে তাঁর।