নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরের ওপরে তৈরি উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থানে পরিবর্তন ঘটছে। এই উচ্চচাপ বলয় ক্রমশ এগিয়ে আসছে স্থলভূমির দিকে। আগামিকালই তা ঝাড়খণ্ডে প্রবেশ করে সেখানে এক ঘূর্ণাবর্তের জন্ম দিতে চলেছে। আর সেই ঘূর্ণাবর্তের টানে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকবে বাংলার পরিমণ্ডলে। সেই জলীয় বাষ্প থেকেই স্থানীয় ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে বৃষ্টি হতে পারে। দিল্লির মৌসম ভবন থেকে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টির ইঙ্গিত দিয়েছে। তাঁদের দাবি, আচমকা বাতাসে জলীয় বাষ্প বৃদ্ধি পেলে রোদের তাপে তা আরও গরম হয়ে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে উঠে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করবে। আর এর জেরেই দক্ষিণবঙ্গে আগামী ৩ দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। তবে উত্তরের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে।
শীত কার্যত বাংলা থেকে বিদায় নিয়ে নিয়েছে। খালি রয়ে গিয়েছে তার আমেজ। বাড়তে শুরু করে দিয়েছে রাতের তাপমাত্রা। বাড়ছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও। শুক্র সকালে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কম। সাগরের উচ্চচাপ বলয় ক্রমশ স্থলভূমির দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় এদিন রাজ্যের দুই উপকূলবর্তী জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। একই সঙ্গে হালকা বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েও। বাকি বাংলা এদিন শুকনোই থাকবে। তবে শনিবার থেকেই বদলে যাবে আবহাওয়া। আকাশ ঢাকা পড়বে মেঘে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার একটা প্রভাব এদিন থেকেই বাংলায় সক্রিয় হবে। আবার সাগরের জলীয় বাষ্পের হাওয়াও আগামিকাল ঠেকে বাংলায় পা রাখা শুরু করবে। আর এই ঠাণ্ডা-গরম হাওয়ার সংঘাতে স্থানীয় ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘের জন্ম দেবে। আর এই মেঘ থেকেই হবে বৃষ্টি। কোথাও কোথাও কালবৈশাখীর মত ঝড় ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জেলার বাসিন্দাদের বজ্রপাত নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মোটের ওপর গাঙ্গেয় বঙ্গের সব জেলাগুলিতেই বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সব জেলাগুলিতে একসঙ্গে হয়ত বৃষ্টি হবে না, তবে বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। তবে বৃষ্টির হাত ধরে যে শীত আবারও বাংলায় ফিরবে এমন আর কোনও সম্ভাবনা নেই। বরঞ্চ এখন যে শীতের আমেজ মিলছে তাও মিলিয়ে যাবে এই বৃষ্টির হাত ধরে। বস্তুত এবার আস্তে আস্তে পারা চড়তে শুরু করে দেব। লাগবে গরম। কার্যত এখনই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডার আমেজ উধাও হচ্ছে। চার দেওয়ালের অন্দরে চালাতে হচ্ছে পাখা। তাই বৃষ্টি ঝরলেও বাংলা এখন গ্রীষ্মমুখী। শীতের দেখা মিলবে আবার পরের বছর।