নিজস্ব প্রতিনিধি: মারণ ভাইরাস করোনা(Corona) শুধু যে বাংলার বুকে অনেক মানুষের জীবন কেড়েছে তাই নয়, ধাক্কা দিয়েছে আমজনতার পকেটেও। বহু মানুষ তাঁদের কাজ হারিয়েছেন, অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন, অনেকে বিকল্প কাজে নামতে বাধ্য হয়েছেন। ঝাড়গ্রামের(Jhargram) বুকে কোভিডের দাপট সেভাবে দেখা না দিলেও সেখানে হস্তশিল্পের সঙ্গে জড়িত শিল্পীদের জীবনকেও ধাক্কা দিয়েছে কোভিড(Covid)। কেননা দীর্ঘ দিনের লকডাউন আর বিধিনিষেধের কড়াকড়িতে তাঁরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য সম্ভার সেভাবে বিক্রি করার কোনও সুযোগই পাননি। আর তাই হাতে টাকাও আসেনি। কোনওরকমে বেঁচে থেকেছেন তাঁরা। এবার যখন কোভিডকাল কাটিয়ে ফের অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তখন রাজ্য সরকারও এগিয়ে এল এই সব শিল্পীদের তাঁদের উৎপাদিত পণ্যসম্ভার বিক্রির জমি তৈরি করে দিতে। শুক্রবার থেকেই তাই শুরু হচ্ছে ঝাড়গ্রাম জেলার হস্তশিল্পের প্রতিযোগিতা(Handicrafts Compitition) ও তার প্রদর্শনী। সব থেকে বড় কথা এই প্রতিযোগিতায় এবার রেকর্ড সংখ্যক শিল্পী অংশ নিচ্ছেন। ৪টি বিভাগে মোট ১০৯জন শিল্পী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চেয়ে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন।
আরও পড়ুন ট্যাব নিয়ে বিপাকে পড়ুয়ারা, রাজ্য চাইছে সার্টিফিকেট
জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলার ৮টি ব্লকের হস্তশিল্পীদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। সেই প্রতিযোগিতায় পাথরের জিনিস তৈরির বিভাগে ৬৬ জন শিল্পী, ঘাসের জিনিস তৈরির বিভাগে ২৩ জন শিল্পী, বাঁশের তৈরি জিনিসের বিভাগে ১০ জন শিল্পী ও অন্যান্য বিভাগে ১০ জন হস্তশিল্পী অংশ নিয়েছেন। এই প্রতিযোগিতায় জয়ীরা রাজ্যস্তরে প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে ঝাড়গ্রাম শহরের ট্রেজারি বিল্ডিংয়ে। রবিবার পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। প্রতিযোগিতার বিচারক হচ্ছেন ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস, জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এই প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী নিয়ে জেলা শিল্পকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার অরুণকুমার ঘোষ জানিয়েছেন, ‘হস্তশিল্পীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গত দু’বছর কোভিড পরিস্থিতির জন্য প্রতিযোগিতা সংগঠিত করা যায়নি। এবছর বিপুল সংখ্যক হস্তশিল্পী অংশ নিচ্ছেন। প্রতিটি বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে হস্তশিল্পের বিকাশ ঘটানোর কথা বলেছিলেন। সেইমতো প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রশাসনের তরফে হস্তশিল্পীদের তৈরি জিনিস রপ্তানির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মেলায় হস্তশিল্পীদের তৈরি জিনিসের প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ফলে বহু হস্তশিল্পী স্বনির্ভর হতে শুরু করেছেন।’