নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার মানুষকে বিনামূল্যে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ২০১৬ সালে স্বাস্থ্যসাথী(Sasthsathi) প্রকল্পের সূচনা করেন। সেই বছর থেকেই এই প্রকল্প চালু করে দেওয়া হয় আমজনতার জন্য। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ সরাসরি এই প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। উপকৃত হয়েছেন প্রায় ৪৪ লক্ষ মানুষ। রাজ্য ও ভিন রাজ্য মিলিয়ে ২ হাজারেরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মেলে এই প্রকল্পের মাধ্যমে চিকিৎসা করানোর সুবিধা। তারপরেও দেখা যাচ্ছে রাজ্যেরই কিছু বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নিরন্তর এই প্রকল্পের মাধ্যমে রোগী ভর্তি করতে যেমন অস্বীকার করছে তেমনি যথাযথ ভাবে এই প্রকল্পের যাবতীয় নিয়ম মেনে চলছে না। তার জেরে চরম ভোগান্তি ও হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে আমজনতাকেও। প্রশ্নের মুখে পড়ছে এই প্রকল্পের ভাবমূর্তিও। তারই জেরে এবার কড়া হতে শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের গাইডলাইন(Guideline) না মানার জেরে এবার তাই পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার ২৮টি নার্সিংহোমকে(Nurshing Home) শোকজ করল জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন ১ বছরে বাংলায় যক্ষাতে আক্রান্ত ১ লক্ষ মানুষ, নেপথ্যে কী কোভিড
ঠিক কী হয়েছে? রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে বেশ কিছু অভিযোগের জেরে স্বাস্থ্য দফতরের একটি টিম জেলার বেশ কিছু নার্সিংহোম পরিদর্শন করে। তখনই একাধিক নার্সিংহোমে পরিকাঠামগত ত্রুটি ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে বেনিয়ম নজরে পড়েছিল স্বাস্থ্য ভবনের টিমে থাকা আধিকারিকদের। তাঁরা ওই পরিদর্শনকালে ওই নার্সিংহোমগুলির মধ্যে কোনওটিতে দেখেন সেখানে হয়তো আরএমও নেই, তো কোনোটির আবার নেই প্রশিক্ষিত নার্স। আবার কোনও জায়গায় নেই ওটি রেজিস্টার। এমনকি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে গাইডলাইন যে যথাযথ ভাবে মানা হচ্ছে না সেটাও তাঁদের চোখে পড়ে। সেই টিম রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে যে রিপোর্ট জমা দেয় তার ভিত্তিতেই এবার স্বাস্থ্য দফতর পশ্চিম মেসিনীপুর জেলার মোট ২৮টি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। তারপরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ওই ২৮টি নার্সিংহোমকে শোকজ নোটিস পাঠানো হয়। সেই নোটিসে বলে দেওয়া হয়েছে যে সব গাফিলতি ওইসব নার্সিংহোমে চিহ্নিত হয়েছে তা কেন হয়েছে সেটা আগামী ১৪ দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে জানাতে হবে। সেই সঙ্গে ১৪ দিনের মধ্যে পরিকাঠামগত ঘাটতি পূরণ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ না করলে আগামী দিনে নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিলেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।