নিজস্ব প্রতিনিধি: মাত্র ৬ মাসেই প্রাণ বাঁচল ৬০০ জন স্ট্রোক রোগীর। নজির তৈরি করল নিউরো টেলিমেডিসিন (TELE MEDICINE)। জানা গিয়েছে, ৭০০ জন রোগী এখনও পর্যন্ত সুবিধা পেয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৬০০ জন ছিলেন স্ট্রোক আক্রান্ত। প্রায় চার ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন এক ইস্কিমিক স্ট্রোক আক্রান্ত ব্যক্তি। এরপর হাসপাতাল থেকে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থায় যোগাযোগ করা হয় কলকাতার বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কথা মতো দেওয়া হয় বিশেষ ইঞ্জেকশন। জানা গিয়েছে, এর ফলে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে প্রায় ৯৫ শতাংশ।
টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে অসুখের ধরণ অনুযায়ী জরুরী চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (MAMATA BANERJEE) নিউরো টেলিমেডিসিন ব্যবস্থা শুরুর বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন। নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর তাতেই দিনের পর দিন রাজ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে টেলিমেডিসিন পরিষেবা।
টেলিমেডিসিন প্রকল্পের প্রধান বিশিষ্ট নিউরোলজিস্ট ডা: বিমান কান্তি রায়। তিনি জানিয়েছেন, ১২ টি হাসপাতালে নিয়ে এই পরিষেবা চালু হয়েছিল। এখন এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে আরও ২৯ টি হাসপাতালে। তিনি আরও বলেন, স্ট্রোক হলে সাড়ে ৪ ঘন্টার মধ্যে রোগীকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে এলে টেলিমেডিসিন মারফত চিকিৎসা সম্ভব। অনেকেই অতিক্রান্ত করে ফেলেন এই সাড়ে ৪ ঘন্টা সময়। তা করা উচিত নয়। দেরি হলে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়ে উঠেছে অনেক ক্ষেত্রেই, তবে সাড়ে ৪ ঘন্টার মধ্যে এলে দ্রুত সুস্থ করে তোলা যায়। উল্লেখ্য, গতবছরের ডিসেম্বরের শেষে শুরু হয়েছিল এই পরিষেবা। সুবিধা পেয়েছেন প্রায় ৭০০ রোগী। এরমধ্যে ৬০০ জন স্ট্রোক আক্রান্ত। এই ৬০০ জনের মধ্যে ৬৬ জন রকি আক্রান্ত হয়েছিলেন ইস্কিমিক স্ট্রোকে। এই ধরনের স্ট্রোক হলে মস্তিষ্কের শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে রোগীর দেহে স্ট্রোকের উপসর্গ ধরা পড়লেই সিটি স্ক্যান করা হয়। তারপরে সেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাঙ্গুর এর ট্রেনিং নিউরো টেলিমেডিসিন বিভাগে। সেখানেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা খতিয়ে দেখেন স্ট্রোকের ধরণ, কোথায় ব্লকেজ আছে বা হতে পারে। ভাবেই সম্ভব হয়ে উঠে দ্রুত চিকিৎসা। জানা গিয়েছে, ৭০ শতাংশ রোগী ইস্কিমিক ও ৩০ শতাংশ রোগী হেমারেজিক ছিলেন। তারা সকলেই ফিরে পেয়েছেন প্রাণ।