নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তর ২৪ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া টাকি দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জনের জন্য জগতবিখ্যাত। কারণ একমাত্র টাকির ইছামতি নদীতেই দুর্গা বিসর্জনের সময় দেখা যায় দুই বাংলার মিলনোৎসব। প্রতি বছরের মত এবারেও দুই বাংলার দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন শুরু হল ইছামতী নদীর গর্ভে। তবে শুক্রবার দেখা মিলল না দুই দেশের মিলন উৎসবের। করোনা সংক্রমণ রুখতে আগে থেকেই দুই দেশের প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিল। তবে মিলন উৎসব বন্ধ থাকলেও প্রতিমা রীতি মেনে প্রতিমা বিসর্জনে ছেদ পড়েনি। মাঝ নদীতে নৌকায় করে প্রতিমা বিসর্জন হল প্রথা মাফিক।
করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দুই বাংলার মানুষ টাকির ইছামতি নদীতে দুর্গা প্রতিমার নিরঞ্জন দিচ্ছে বলে জানিয়েছে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসন। টাকি পূর্ব জমিদার বাড়ির প্রতিমাই এখানে প্রথম নিরঞ্জন করা হয়। এটাই ৩০০ বছরের প্রথা। সেই প্রথা মেনেই শুক্রবার দুপুরে টাকির ইছামতির ঘাটে প্রথমে নিয়ে আসা হয় টাকি-পূর্বের জমিদারবাড়ির দুর্গা প্রতিমা। প্রাচীন প্রথা মেনেই ২৬ জন বেয়ারা টাকি-পূর্বের জমিদারবাড়ির প্রতিমা কাঁধে করে নিয়ে এসে দুই বাংলার মিলনস্থল, ইছমতীর গর্ভে বিসর্জন করেন। এরপর একে একে দুই বাংলার দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। ওপার বাংলার প্রতিমাও অপেক্ষায় থাকে টাকি জমিদার বাড়ির প্রতিমা বিসর্জন হওয়া পর্যন্ত, এটাই প্রচলিত রীতি।
টাকির ইছামতি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হলে আগে থেকে নাম নথিভূক্ত করতে হয় পুজো কমিটি বা বাড়ির পুজোগুলিকে। এবার সেই নিয়ম পালন হয়েছে। সিরিয়াল নম্বর ধরেই একের পর এক প্রতিমা নৌকায় তোলা হয়েছে। যা দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন বহু দর্শনার্থী। যদিও এবার জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা, করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দুই বাংলার উৎসাহী মানুষ-জন ইছামতী নদীতে একসঙ্গে দুই দেশের প্রতিমা নিরঞ্জনের সাক্ষ্য হতে জমায়েত করেছেন এদিন। কোনও রকম অপ্রিতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ইছামতির জলে টহল দিয়েছে ভারতের বিএসএফ এবং বাংলাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-র জওয়ানরা। ছিলেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারাও।