নিজস্ব প্রতিনিধি: দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দিক থেকেই বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গেলেন বাংলার বিরোধী দলনেতা। তিনি চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ও তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসকে(TMC) ধাক্কা দিতে Sagardighi Model-এ ভোট হোক পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayat Election)। অর্থাৎ বাম-কংগ্রেস জোটে(Left-Congress Alliance) যোগ দেবে বা তাকে সমর্থন করবে বিজেপি(BJP)। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা(J P Nadda)। বাংলায় শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) লাইনকে খারিজ করে দিল দিল্লির কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতৃত্ব। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, কোনওমতেই বাংলায় তৃণমূলকে ঠেকাতে বাম-কংগ্রেস জোটকে সমর্থন নয়। সেই জোটে যাবেও না বিজেপি। কেননা, সাগরদিঘীর উপনির্বাচনে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করার স্টাইলে বাম-কং জোটকে মদত দেওয়ার ঘটনায় ভয়ানক চটেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরও পড়ুন বঙ্গের DA মামলার শুনানি হতে পারে ২১ মার্চ
জানা গিয়েছে, শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা ও বঙ্গ বিজেপির সাম্প্রতিকতম বেশ কিছু ঘটনা একদমই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না দলের আদি নেতারা। এমনকি বঙ্গ বিজেপির শুভেন্দু বিরোধীরা চাইছেন তাঁর বিরোধী দলনেতার পদটাও কেড়ে নেওয়া হোক। এরাই সাগরদিঘীতে বিজেপি প্রার্থীর জমানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার ঘটনায় শুভেন্দুর ওপর রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাঁদের দাবি, কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে জেতাতেই শুভেন্দুর অঙ্গুলিহেলনে বিজেপির ভোট চলে গিয়েছে কংগ্রেসের ভোটে। যা কার্যত নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গের সামিল। তাই বঙ্গ বিজেপির দুই শুভেন্দু বিরোধী নেতা সাগরদিঘীর ফলাফলের ময়নাতদন্ত করে তার রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন নাড্ডার কাছে। বিষয়টি নিয়ে দিন দুই আগে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বি এল সন্তোষ ও জে পি নাড্ডার মধ্যে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে। তার পরেই কড়া বাররাত দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু সহ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে। সেখানে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, তৃণমূলকে হারাতে হলে বিজেপিকে একাই লড়তে হবে। বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট-ঘোঁট, আঁতাত-বোঝাপড়া করা যাবে না।
আরও পড়ুন কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি আরও ৫ লক্ষ টন ধান কিনবে রাজ্য
জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজনৈতিক মতাদর্শগতভাবে বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের বিস্তর দূরত্ব ও পার্থক্য রয়েছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে নীতিগত বিরোধ প্রকাশ্যেই চলেছে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির। সেখানে বাংলায় তৃণমূলের বিকল্প হওয়ার জন্য যখন চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন শুভেন্দু অধিকারীদের ব্যক্তিগত ভাবনায় জোড়াফুলকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বাম-কংগ্রেসকে প্রকাশ্যেই তোল্লা দেওয়ার অর্থ আত্মহনের সামিল। বিজেপির নিজস্ব ভোটব্যাংক এখনও বাংলায় ৪-৫ শতাংশের বেশি নয়। বাম-কংগ্রেসের ভোট নিজেদের দিকে টেনে এনেই ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে পদ্মশিবির বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু শুভেন্দুদের ব্যক্তিগত লাইনের জেরে যদি Sagardighi Model-এ বাম-কংগ্রেসের ভোট বিজেপি থেকে সরে যায় তবে পদ্ম শিবিরেরই ক্ষতি হবে সব থেকে বেশি। কারণ, এমন হলে জনমানসে একটা ধারণা তৈরি হবে যে আগামী দিনে বাম-কংগ্রেসই তৃণমূলের বিকল্প হিসাবে জিততে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলায় বিজেপির ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকা্রে ডুবে যাবে। তাই সেটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।