নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যজুড়ে আর কিছুদিন বাদেই মহাসমারোহে পালিত হবে কালীপুজো। নিয়ম মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো চলবে সর্বত্র। এরই সঙ্গে সর্বত্র ওইদিন পুজোতে হবেন মন্দির ও রাজবাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠা করা কালী মায়ের পুজো। কোথাও ৫০০ বছর, কোথাও ২৫০ বছর আবার কোথাও বছরের খেয়াল নেই, সর্বত্র জাঁকিয়ে করা হবে মায়ের আরাধনা। তেমনই ইতিহাসে জর্জরিত রায়গঞ্জ বন্দরের আদি কালীবাড়ির পুজো নিয়ে এমনই অনেক গল্প রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৫০০ বছরের পুরোনো এই কালীপুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ভক্তি এবং নিয়ম-নিষ্ঠা। একাধিক কাহিনী ঘিরে রয়েছে এই পুজোকে কেন্দ্র করে। কালীপুজোর দিন উপচে পড়ে ভক্তের ঢল।
উত্তর দিনাজপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন ও জনপ্রিয় কালীপুজো এটি। কথিত আছে, সিদ্ধিলাভের জন্য পঞ্জাব প্রদেশের এক সাধু হেঁটে এসে কুলিক নদীর তীরে বন্দর এলাকায় একটি গাছের নীচে পঞ্চমুণ্ডি আসন প্রতিষ্ঠা করে সাধনায় বসেন। সিদ্ধিলাভও করেন তিনি। তারপর তিনি চলে যান। সেই থেকেই এই পঞ্চমুণ্ডির বেদিতে কালীপুজো শুরু হয়। তারপর নানা অলৌকিক ঘটনার পর এখানে মন্দির নির্মাণ হয়। শোনা যায়, কালীপুজোর দিন রাতে মায়ের পায়ের নূপুরের আওয়াজ পাওয়া যায়। ভক্তের সমাগম হয়, অনেকে আবার মায়ের দর্শন পেয়েছেন বলেও শোনা যায়।
রায়গঞ্জ বন্দরে বর্তমানে পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন পুরোহিত মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ‘কথিত আছে, বেদি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে মা হেঁটে বেড়াতেন। কালীপুজোর রাতে মায়ের পায়ের নূপুরধ্বনি শোনা যেত। এরপর তৎকালীন দিনাজপুরের রাজা মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই স্থানে মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দির নির্মাণের পর বামাক্ষ্যাপার উত্তরসূরী সাধক জানকীনাথ চট্টোপাধ্যায় ১২১৬ সালে বেনারস থেকে মায়ের কষ্টিপাথরের মূর্তি এনে মন্দিরে স্থাপন করেন। তখন থেকে এই মন্দিরে নিত্যপুজো শুরু হয় এবং কালীপুজোর রাতে মায়ের বিশেষ পুজো হয়। এখানে তন্ত্রমতে দেবীর পুজো হয়। কালীপুজোর দিন শোল মাছ দিয়ে মা-কে বিশেষ ভোগ দেওয়া হয়। রয়েছে পাঁঠাবলির প্রথাও।’ বিহার, ওড়িশা, বাংলাদেশ থেকে আসেন ভক্তরা।