নিজস্ব প্রতিনিধি,হরিশ্চন্দ্রপুর: ছেলে ভিন রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করে।ঈদের প্রাক্কালে টাকা পাঠিয়েছিল মাকে। ছেলের পাঠানো টাকা তোলার জন্য স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টে যায় মা।টাকা তোলার জন্য নেওয়া হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট(Finger Print)। কিন্তু তারপর সিএসপি কর্তৃপক্ষ জানায় লিংক না থাকার জন্য টাকা তোলা যাবে না। পরের দিন অন্য একটি সিএসপিতে গিয়ে দেখেন একাউন্টে এক টাকাও নেই।এদিকে ঘটনার ১৫ দিন হয়ে গেলেও সিএসপি মালিকের কথা অনুযায়ী এখনো একাউন্টে ঢোকেনি টাকা।নিজের টাকা ফেরত পেতে এবার পুলিশের দারস্থ হলেন ওই মহিলা।
যদিও ওই সিএসপি(CSP) মালিকের দাবি লিংক না থাকার জন্য উনি টাকা তুলতে পারেন নি। টাকা কেটে নিয়েছিল একাউন্ট থেকে। ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী সেই টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্রেডিট হয়ে যাবে। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ঘটনা। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার গাংনদীয়া বাঁধপাড়া এলাকার বাসিন্দা খাইরুন বিবি।তার ছেলে ভিন রাজ্যের রাজমিস্ত্রির কাজ করে। মায়ের একাউন্টে ৭০০০ টাকা পাঠিয়ে ছিল।সেই টাকা তোলার জন্য খাইরুন বিবি মার্চ মাসের ১৫ তারিখ মিশ্রপাড়া ফুলচান মোড়ে বঙ্গীয় গ্রামীন বিকাশ ব্যাঙ্কের একটি সিএসপিতে যান। ওই সিএসপির মালিক উজ্জ্বল মাহাড়া টাকা তোলার জন্য তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়। কিন্তু তারপরে জানায় লিঙ্ক(Link) নেই তাই টাকা উঠবে না।খাইরুন বিবি সেই সময় বাড়ি চলে যান। তারপরের দিন বাড়ির কাছে একটি সিএসপিতে আবার যান। গিয়ে ব্যালেন্স চেক করতে গিয়ে দেখেন তার একাউন্টে এক টাকাও নেই। হতবাক হয়ে যান খাইরুন বিবি।তিনি উজ্জ্বল মাহারার কাছে গেলে উজ্জ্বল মাহাড়া বলেন লিংক সমস্যার জন্য টাকা কেটে নিয়েছে। সেই টাকা পুনরায় একাউন্টে ঢুকে যাবে। এদিকে তারপর ১৫ দিন হয়ে গেল এখনো ঢোকেনি টাকা।
তিনি পুনরায় ওই সিএসপিতে গেলে তার কাছে আধার কার্ড এবং পাসবুক চাওয়া হয়। তিনি দিতে না চাইলে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। তারপরেই নিজের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য শনিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় গিয়ে উজ্জ্বল মাহাড়ার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন খাইরুন বিবি।যদিও উজ্জ্বল মাহাড়ার দাবি, এখানে তার কিছু করার নেই। নিয়ম অনুযায়ী টাকা ফেরত চলে যাবে।অভিযোগকারী খাইরুন বিবি বলেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নিয়েছিল কিন্তু তারপর বলেছিল লিংক নেই। তারপরে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব। আমি আমার টাকা ফেরত চাইছি। আমার ছেলে কষ্ট করে টাকা পাঠিয়েছে।খাইরুন বিবির স্বামী আফসার আলী বলেন, আমার ছেলে আমার স্ত্রীর একাউন্টে টাকা পাঠিয়েছিল। সেই টাকা তুলতে গিয়ে এই বিপত্তি। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই তাই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।
সিএসপির মালিক উজ্জ্বল মাহাড়া বলেন, এই সমস্যাটা অনেকেই বুঝতে পারেন না আমাদের দোষারোপ করেন। লিংক না থাকলে টাকা ডেবিট হয়ে যায়। কিছু দিনের মধ্যে আবার সেটা ক্রেডিট হয়ে যায়। এই দুই সপ্তাহে অনেকদিন ব্যাংক বন্ধ ছিল। তাই হয়তো দেরি হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে খুলছে বিভিন্ন ব্যাংকের সিএসপি। কিন্তু সেখানে গিয়ে অনেক সময় হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিশেষ করে এই ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে টাকা তোলার সময় বিপত্তি ঘটছে। এলাকাবাসীর মতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এই ব্যাপারটি দেখা উচিত। মানুষকে সঠিক নিয়ম জানানো উচিত।