নিজস্ব প্রতিনিধি: ইউক্রেনে গিয়েছিল ডাক্তারি পড়তে। কখনও ভাবেনি বিদেশবিভুঁইয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে চাক্ষুষ করতে হবে যুদ্ধের ভয়াবহ দৃশ্য। অথচ সেই যুদ্ধের কারণে পড়াশোনার পাঠ থামিয়ে দেশে ফিরতে হল মালদার পড়ুয়া মৌমী সিংহের।
মৌমী সিংহের বাড়ি মালদা জেলার ইংরেজবাজার শহরের মালঞ্চ পল্লীতে। বাবা সন্দীপ কুমার সিংহ এবং মা মিতা সিংহ। তাঁদের একমাত্র সন্তান মৌমী। মৌমীর বাবা পেশায় ব্যবসায়ী। দু’বছর আগে মেয়েকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে পাঠিয়েছিলেন ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে। ইউক্রেনের খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী মৌমী সিংহ। যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেন থেকে ঘরের মেয়ে প্রাণে বেঁচে ঘরে ফেরায় স্বাভাবিকভাবে খুশি হয়েছেন মৌমীর বাবা-মা। মালদার ইংরেজবাজারের মালঞ্চ পল্লীতে নিজের বাড়িতে বসে মৌমী শোনাল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সেই সময়ের অভিজ্ঞতার কথা। তাঁর কথায়, ‘প্রতিদিন বোমার শব্দ কানে আসতো। আতঙ্কের মধ্যে ঘুম আসত না। খাবারের অভাব, পানীয় জলের অভাব তো ছিলই। খারকিভ থেকে মাইনাস তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করে ১৩-১৪ কিলোমিটার হেঁটে পিসোচীনে এসেছিলাম। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের একটা শিবিরে রাখে। সেখানে দিন কয়েক থাকার পর তারাই বাসে করে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছে দেয়। রোমানিয়া পৌঁছানোর পর আমাদের আর কোনো অসুবিধা হয়নি’। দেশে ফিরে আসতে ভারত সরকার সহযোগিতা করেছে বলে জানায় মৌমী। রোমানিয়া সীমান্তে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে খাবারের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি গরম পোশাকেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে জানায় বাংলার এই পড়ুয়া। পরে বিমানে তুলে দিল্লি পৌঁছে দেওয়া হয়। তারপর সেখান থেকে কলকাতা। এরপর কলকাতা থেকে ফেরে নিজের বাড়িতে।
মেয়ে বাড়ি ফেরায় একদিকে যেমন খুশি মৌমীর বাবা-মা অন্যদিকে মৌমীর কেরিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায়ও রয়েছেন তাঁরা। কীভাবে সে ডাক্তারি পড়া সম্পন্ন করবে তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা। মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন মৌমীর মা। পাশাপাশি কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার যাতে দেশে মেয়ের পড়াশোনার ব্যবস্থা করে সেই আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।