নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের(TMCP) প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। প্রতিটি ধর্ম, জাতি তাঁর কতটা আপন তা বোঝাতে দেহের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সঙ্গে তুলনা টেনেছিলেন। সেইসময় রাজবংশী(Rajbangshi) সম্প্রদায় তাঁর এক পা এবং অন্য পা মতুয়া সম্প্রদায় বলে দাবি করেছিলেন। আর তাঁর সেই মন্তব্যের অপব্যাখা করে জলঘোলা করতে শুরু করে দিয়েছিল পদ্মশিবির। লক্ষ্য রাজবংশীদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দিয়ে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে(Dhupguri Bye Election) ফায়দা তোলা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা বার্তা দিলেন তিনিও, মানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। ট্যুইট করেই কড়া বার্তা দিলেন তিনি। সাফ জানালেন, ‘রাজবংশী সম্প্রদায়কে কতটা সম্মান করি তা আমার উন্নয়নকার্যেই স্পষ্ট। বিশ্বাসঘাতকরা আমার শ্রদ্ধা, ভালবাসা, একতার অপব্যাখ্যা করে জনগণের মনে ঘৃণা ঢোকাচ্ছে। সেই সব বিশ্বাসঘাতকদের জন্য আমার লজ্জা হয়।’
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। সেই আসন একুশের ভোটে গিয়েছিল বিজেপির দখলে। এবারের নির্বাচনে বিজেপির কাছে কার্যত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আসন ধরে রাখার। কেননা একুশের ভোটের পরে বাংলার বুকে ধারাবাহিক হারের মুখ দেখে চলেছে পদ্মশিবির। একই সঙ্গে তৃণমূল চাইছে এই আসন পুনঃরুদ্ধারের। অস্বীকার করার উপায় নেই এই উপনির্বাচনে কারা জয়ের মুখ দেখবে সেটা ঠিক করে দেবেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের ভোটাররা। কেননা সেখানে তাঁরাই ওই আসনের নির্ণায়ক ভোটার। উনিশ ও একুশের ভোটে রাজবংশীরা দুই হাত উপুড় করে ঢেলে ভোট দিয়েছিল বিজেপিকে। কিন্তু একুশের ভোটের পর থেকে দ্রুত সেই ছবি বদলে যাচ্ছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচন হোক কী হালের পঞ্চায়েত ভোট, রাজবংশীদের সমর্থন আর পায়নি বিজেপি(BJP)। এই অবস্থায় ধূপগুড়ির আসন ধরে রাখতে নোংরামির আশ্রয় নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের অপব্যাখা করা শুরু করে দিয়েছে। কার্যত কুৎসার রাজনীতি করছে তাঁরা।
গত সোমবার ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। মেয়ো রোডের সভামঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছিলেন, ‘আমার এক হাত যদি হয় হিন্দু তবে আরেক হাত মুসলমান…আমার একটা পা যদি হয় রাজবংশী আর একটা পায়ে আমি চলি তাদেরকে দেখে নমস্কার করি, সেটা হচ্ছে মতুয়া…’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যকে নিয়ে সরব হয় বিজেপি। বুধবারই উত্তরের এক সভা থেকে তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক(Nishith Pramanik)। তাঁর কথায়, ‘রাজবংশীদের নিজের পায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অত্যন্ত লজ্জাজনক। কোচবিহারবাসী এই অপমান মেনে নেবে না।’ তার জেরেই বুধ রাতেই ট্যুইট করে পাল্টা বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী। সাফ জানিয়ে দেন, ‘আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিজেপি এসব করে নিজেদের জাতিগত বিদ্বেষের আর বিভেদের রাজনীতির চরিত্রটাই তুলে ধরছে।’ সেই সঙ্গে নাম না করেই নিশীথকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে চিহ্নিত করে দিয়েছেন।