নিজস্ব প্রতিনিধি: কংগ্রেস থেকে তৃণমূল ঘুরে বিজেপি। বউ তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তাঁকে ডিভোর্স দিয়েছেন সাংবাদিক বৈঠকে। এহেন মানুষকে আবারও ২৪’র ভোটে(Loksabha Election 2024) দলের টিকিট দিতে বিন্দুমাত্র পিছিয়ে যায়নি বিজেপি(BJP)। কেননা এই একটি দলই আছে ভারতবর্ষে যেখানে যোগ দিলেই গায়ের সব ময়লা ধুয়ে সাফ হয়ে যায়। কিন্তু সত্যিই কী সব কিছু সাফ হয়ে যায় বিজেপি করলেই! হয়তো সাফ হয়না বলেই বার বার বাংলার সংবাদমাধ্যমে ফিরে ফিরে আসেন সৌমিত্র-সুজাতা। এককালে যারা ছিলেন দম্পতি, রাজনীতির স্রোতে আজ তাঁরাই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী। মল্লভূম বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর লোকসভা(Bishnupur Constituency) কেন্দ্র বিজেপির প্রার্থী হিসাবে মাঠে আছেন সৌমিত্র খাঁ(Soumitra Khan)। তৃণমূল(TMC) সেই আসনেই দাঁড় করিয়েছে সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলকে(Sujata Mondol)। এদিন বাঁকুড়ায় তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভা থেকে সেই সৌমিত্রকেই নাম না করেই তীব্র কটাক্ষ হানলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপিতে গেলেই সব দোষ, ময়লা ধুয়ে সাফ হওয়া যাবে না।
সোমবার বেলায় বাঁকুড়া জেলার রায়পুরে ছিল তৃণমূলের নির্বাচনী সভা। বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর সমর্থনে সেই সভায় যোগ দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর সেই সভা থেকেই তিনি নাম না করেই বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদকে কটাক্ষ হানেন মমতা। তিনি বলেন, ‘গত লোকসভায় বিজেপি বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরে জিতেছিল। কিছু করেছে? ক’বার তালডাংরা, রাইপুর গেছেন? সব সময় তো নিজের কাজে ব্যস্ত। মানুষের কাজে বাবুদের সময় কোথায়? কী করেছে বাঁকুড়ার জন্য, বিষ্ণুপুরের জন্য? জঙ্গলমহলের জন্য? কিছু করেছে? আর বিষ্ণুপুরের সাংসদের কথা নাই বা বললাম। জানি না ডিভোর্স হয়েছে কি না। তাঁর স্ত্রী দাঁড়িয়েছেন সেখানে। সাংসদের যদি আমি ফোটোগুলো খুলি বিষ্ণুপুরের মানুষ বুঝতে পারবেন বিজেপি কত আদর্শবান দল। সব ছবি আমার কাছে আছে। যদি ছবি বার করি, তবে বুঝবেন, যারা মিথ্যে কথা বলে বেড়ায় সেই সাংসদ কত আদর্শবান।’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সৌমিত্র কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। পরে তিনি চলে আসেন তৃণমূলে। ২০১৪ সালে তৃণমূল তাঁকে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থী করেন এবং তিনি জিতেও যান। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। পদ্মশিবির তাঁকে ভোটের টিকিট দেন এবং সেই নির্বাচনেও জিতে যান সৌমিত্র। সব থেকে বড় কথা ওই নির্বাচনের সময়ে একটি মামলার দরুণ আদালতের নির্দেশ ছিল বাঁকুড়া জেলায় পা রাখতে পারবেন না সৌমিত্র। সেই রায় মেনে সৌমিত্রের হয়ে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রজুড়ে প্রচার করেছিলেন তাঁর স্ত্রী সুজাতা। স্বামীর হয়ে স্ত্রীর সেই মাটি কামড়ে পড়ে থাকার লড়াইকে কুর্ণিশ জানিয়েছিল মল্লভূম। জিতেছিলেন সৌমিত্র। কিন্তু সেই সুজাতাই যখন তৃণমূলে যোগ দিলেন, তখন সৌমিত্র তাঁকে ডিভোর্স দিতে ২ মিনিটেরবেশি ৩ মিনিট সময় নেননি। এখন দেখার বিষয় উনিশের ভোটে সুজাতা সৌমিত্রকে জেতাতে সক্ষম হলেও ২৪’র ভোটে তাঁকে পরাস্ত করতে পারেন কিনা।