নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনের বছরেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election)। তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে রয়েছে লোকসভার নির্বাচন। এই প্রেক্ষাপটেই এবার রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে কড়া নজর দিতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন রাজ্যের মা-মাটি-মানুষের সরকার। সেই কারণেই রাজ্য সরকারের(State Government) ২২টি দফতরকে প্রথম পর্যায়ে ৫৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আরআইডিএফ(RIDF) বা রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড প্রকল্পের অধীনে এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে নবান্ন(Nabanna) সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে চলতি আর্থিক বছরের বাজেট বরাদ্দের ২৫ শতাংশ এই দফতরগুলিকে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ইতিমধ্যেই সেচ দফতরকে ৩.৫৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এবার বাকি ৫৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ছাড়ারও বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিয়েছে রাজ্যের অর্থ দফতর।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরেই রাজ্যের সেচ দফতরকে আরও ৫৮ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। জলসম্পদ দফতর পেতে চলেছে ৬৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর পাচ্ছে ৫০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ দফতর পাবে ৩৮ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা দফতর পেতে চলেছে ২৫ কোটি টাকা করে। এছাড়াও খাদ্যদফতর ১৫ কোটি টাকা পাবে বলে জানা গিয়েছে। তবে সবথেকে বেশি টাকা পাবে রাজ্যের পূর্ত দফতর। তাঁদের প্রাপ্তির পরিমাণ ১৩৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এছাড়াও সংখ্যালঘু উন্নয়ন, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন, সুন্দরবন উন্নয়ন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন, সমবায়, নারী শিশু ও সমাজ কল্যাণ, কৃষি, কৃষি বিপণন, প্রাণিসম্পদ, স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য উন্নয়ন, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। বর্ষার আগে গ্রামবাংলায় যাতে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুত শুরু করা যায়, তার জন্যই এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। রাস্তা, সেতু ও বাঁধ তৈরি এবং সংস্কারের কাজে সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই সেচ ও পূর্ত দফতর সবথেকে বেশি টাকা পেয়েছে।
উল্লেখ্য, আরআইডিএফ-এর অধীনে কাজের জন্য টাকার বেশিরভাগটাই আসে নাবার্ডের ঋণ থেকে। রাজ্য সরকারকেও সেখানে অর্থ বরাদ্দ করতে হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে আরআইডিএফ প্রকল্পটি গোটা দেশে চালু হয়। নাবার্ডের অনুমোদন নিয়ে এই প্রকল্পের কাজ করতে পারে সরকারি দফতর ও সংস্থাগুলি। তবে এই বরাদ্দের মধ্যে অনেকেই কিন্তু মনে করছেন রাজ্য সরকারের এখন পাখির চোখ আগামী বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন। কেননা একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও দেখা গিয়েছে শহর এলাকায় শাসক দলের ভোট প্রাপ্তির হার ভাল না হলেও গ্রামীণ এলাকার মানুষ দুই হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছেন। তাই গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নকেই এখন বেশি জোর দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।