27ºc, Haze
Tuesday, 28th March, 2023 11:36 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী আগামী ৩১ জানুয়ারি বীরভূম(Birbhum) জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। আর সেদিন থেকেই নিত্যদিনের যানজট সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে চলেছেন নলহাটিবাসী। কেননা সেদিনই মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হতে চলেছে শহরের নবনির্মিত উড়ালপুলের(Flyover)। রাজ্য সরকার ও রেল যৌথভাবে ৪০ কোটি টাকা খরচ করে এই উড়ালপুল নির্মাণ করেছে। কিছুদিন আগে এই উড়ালপুল নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তারপর উদ্বোধনের আগে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখে গিয়েছেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। পরীক্ষামূলকভাবে যানবাহনও চলাচল শুরু করেছে। কিন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে আগামী ৩১ জানুয়ারি তা উদ্বোধন করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওইদিন বোলপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে ভার্চুয়ালি তা উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এর জেরে রেলগেটের যানজটের যন্ত্রণা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেতে চলায় নলহাটি(Nalhati) পুরসভার বাসিন্দারা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে কলকাতায় ৫০০ Solar Tree বসাচ্ছে KMC
বীরভূম জেলার রামপুরহাট মহকুমার নলহাটি শহরের বুক চিরে চলে গিয়েছে পূর্ব রেলের বর্ধমান-রামপুরহাট-মালদা টাউন শাখার লাইন। আবার এই জংশন স্টেশন থেকেই আলাদা হয়ে গিয়েছে নলহাটি-আজিমগঞ্জ শাখার লাইন। দ্বিতীয় লাইনটিতে যাত্রীবাহী ট্রেনের ভিড় না থাকলেও মালগাড়ি বেশ ভাল সংখ্যায় চলাচল করে। কেননা এই লাইন দিয়েই সাগরদিঘী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কয়লা গিয়ে পৌঁছায়। আবার প্রথম লাইনটিতে দিনভর লেগে থাকে লোকাল ট্রেন, দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন ও মালগাড়ির চলাচল। ফলে নলহাটি স্টেশনের দক্ষিণপ্রান্তে থাকা রেলগেটটি ধরতে গেলে দিনের বেশির ভাগ সময়েই বন্ধ থাকে। আর তার জেরেই এই নিত্যদিনের যানজট নলহাটিবাসীর কাছে এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমনকি এর জেরে শহরের পশিম দিকের এলাকার উন্নয়নও যথেষ্ট ব্যাহত হচ্ছিল। ধাক্কা লাগছিল এই শহরের আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা পাথরের ব্যবসা ও শহরের পাইকারি ব্যবসাও। শুধু তাই নয়, ঝুঁকি নিয়েই স্কুল কলেজের পড়ুয়া থেকে নিত্য পথচারীদের রেল লাইন পারাপার করতে গিয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীনও হতে হয়েছে।
আরও পড়ুন নেপথ্য যোশী মঠ বিপর্যয়, জলাজমি বাঁচাতে Master Plan মমতার
আর এসবের জেরেই দীর্ঘদিন ধরে নলহাটিবাসীর দাবি ছিল রেল স্টেশনের দক্ষিণদিকে থাকা রেলগেটে একটি উড়ালপুল চালু করা হোক। কিন্তু সেখানে রাস্তা এত সংকীর্ণ ও জনবসতি এত ঘন যে ওই জায়গায় উড়ালপুল তৈরি করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তাই ঠিক করা হয় শহরে দক্ষীনপ্রান্ত দিয়ে যে নলহাটি-পাকুড়িয়া জেলা সড়ক চলে গিয়েছে তারওপরেই এই নতুন উড়ালপুল নির্মাণ করা হবে। সেই মতো রাজ্য সরকার এই উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই উড়ালপুল নির্মাণের জন্য সবুজ সঙ্কেত দেয় রেল মন্ত্রকও। সেই মতো ২০১৮ সালে জগধারী ও করিমপুর এলাকায় বাইপাস রাস্তার ওপর এই উড়ালপুল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ এই উড়ালপুল নলহাটি-পাকুড়িয়া জেলা সড়ককে সংযোগ করেছে রানিগঞ্জ মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে। এই উড়ালপুলের দুইদিকের সার্ভিস রোড নির্মাণ করেছে রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতর। খালি রেল লাইনের ওপরের অংশে থাকা গার্ডারের ব্যয়ভার বহণ করেছে রেল। এই উড়ালপুল নির্মীত হয়ে যাওয়ায় সব থেকে বেশি লাভবান হবেন পাথর খাদানের ব্যবসায়ীরা, বাসে করে যাতায়াত করা নিত্যযাত্রীরা এবং শহরের স্কুটি বা বাইকে চড়ে যাতায়াত করা বাসিন্দারা। কেননা স্টেশন সংলগ্ন রেলগেট বন্ধ হয়ে থাকলে তাঁরা এই উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের আর যানজটের মুখে পড়তে হবে না।