নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘আগে ঝাড়গ্রামের মানুষ ৯ মাস ভাত থেকে পারত না। পিঁপড়ে সিদ্ধ করে খেত। এখন কেউ অনাহারে থাকে না। দুয়ারে রেশন, দুয়ারে সরকার পৌঁছে গিয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-এর মাধ্যমে সরাসরি মা বোনেদের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাচ্ছে।’ বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম(Jhargram) স্টেডিয়ামে দলীয় কর্মসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে জেলার বদলে যাওয়া ছবিকে এভাবেই তুলে ধরলেন মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাম জমানায় তৎকালীন পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার মধ্যে থাকা ঝাড়গ্রাম মহকুমার যে দুরাবস্থা ছিল বিগত ১১ বছরে ধীরে ধীরে সেই ছবি অনেকটাই বদলে দিয়েছেন মমতা। জঙ্গলমহলের অন্যতম এই জেলাকে মমতা সাজিয়েছেন তাঁর উন্নয়নের ডালি দিয়ে। ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন তাঁর সরকারের শতাধিক আর্থসামাজিক প্রকল্পকে। যার দরুন ঝাড়গ্রাম থেকে দারিদ্র্যতাকে(Poverty) যেমন অনেকটাই পিছনে ঠেলে দেওয়া গিয়েছে তেমনি সামনে এগিয়ে আনা গিয়েছে সেখানকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নকে। বাস্তবেই যে ঝাড়গ্রাম বদলাচ্ছে তার সব থেকে বড় প্রমাণ, খোদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর গোয়েন্দা রিপোর্টেই উঠে এসেছে মাওবাদীরা(Maoists) হাজার চেষ্টা করেও এখন আর জঙ্গলমহলের জনতাকে কাছে টানতে পারছে না।
এদিন মমতা সেই ঝাড়গ্রামের উন্নয়নের ছবিকেই তুলে ধরেন তাঁর বক্তব্যে। বলেন, ‘আগে ঝাড়গ্রামে অনুর্বর জমি ছিল। এখন জমি উন্নত হয়েছে। জলকষ্ট দূর করতে আগেই ৫০০ কোটি টাকার চেক ড্যাম হয়েছিল। এবার আরও পুকুর খনন হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ছাগল-মুরগি প্রতিপালন থেকে মাদুর শিল্প, ধামসা-মাদল, পাথর শিল্পের উন্নয়নের ব্যাপারেও কাজ করা হয়েছে। আরও কাজ হবে। ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজমের ভাল সম্ভাবনা আছে। এখানে হোম ট্যুরিজম গড়ে তুলতে হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর যে সব মেয়েরা আছে তাঁদের হাতে দায়িত্ব দিতে হবে অতিথি অপ্যায়ণের। সেই সঙ্গে দেখতে হবে ভুল বুঝিয়ে যেন কেউ এলাকার মানুষদের ভুল পথে চালিত না করেন। দেখতে হবে বাইরে থেকে এখানে এসে কেউ যেন দাঙ্গা লাগিয়ে দেয়। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। বেলপাহাড়ি, লালগড়, জামবনিতে কী হচ্ছে তা আমি নিজে খোঁজ রাখি। পুলিশকেও তাই চোখ কান খুলে চলতে হবে। দলের কর্মীদের আরও বেশি করে মানুষের কাছে যেতে হবে। ধমক দিয়ে নয়, কাজ দিয়ে মানুষকে চমকে দিন।’