নিজস্ব প্রতিনিধি: আবেদন করলেই হারাতে হবে নাগরিকত্ব। CAA নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের জনসভা থেকে তা একাধিকবার জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই একই বার্তা নিয়ে এবার নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে(Krishnanagar Constituency) বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে নেমে পড়েছেন সেখানকার মতুয়া নির্দল প্রার্থী সঞ্জিত বিশ্বাস(Sanjit Bishwas)। ভোটের লড়াইয়ে একটা প্রশ্ন নিয়েই ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। ‘প্রাপ্য নাগরিকত্ব পেতে কেন নিজেকে অনুপ্রবেশকারী বা বিদেশি শংসাপত্র দিতে হবে?’ সঞ্জিতের এই প্রশ্ন বিজেপি(BJP) নেতাদের এখন সেখানে রীতিমত অস্বস্তির মুখে ফেলে দিয়েছে। যার ফলে সেখানে বিজেপির CAA ইস্যুতে লড়াইয়ের হাতিয়ার অনেকটাই ভোঁতা হয়ে গিয়েছে এই কেন্দ্রে। সাধারণ মানুষও মনে করছেন, CAA নিয়ে বিজেপির ‘ভাঁওতাবাজি’ তুলে ধরছেন মতুয়া প্রার্থী। এমনকী গেরুয়া শিবির সুকৌশলে মতুয়া(Matua) সম্প্রদায়ের মানুষকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোট খুব একটা বড় ফ্যাক্টর নয়। কেননা এই লোকসভা কেন্দ্রে মাত্র ১৩ শতাংশ মতুয়া ভোট রয়েছে। যার মধ্যে সিংহভাগই তেহট্ট, পলাশীপাড়া, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায়। তেহট্ট বিধানসভায় প্রায় ৪৮ শতাংশ আর পলাশীপাড়া বিধানসভায় প্রায় ৪০ শতাংশ মতুয়া ভোট রয়েছে বলে দাবি করেন মতুয়া প্রার্থী। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, পলাশীপাড়া বাদ দিয়ে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ ও তেহট্ট বিধানসভায় গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি লিড দিয়েছিল। অর্থাৎ সেবার মতুয়া ভোট গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। এবার তেমন হবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তেহট্টের বাসিন্দা সঞ্জিত বিশ্বাস মতুয়া সম্প্রদায় থেকে নির্দল প্রার্থী হওয়ায় আশা জেগেছে তৃণমূলের মনেও। কারণ ওই এলাকায় বিজেপির মতুয়া ভোটে এবার চিড় ধরবে বলেই তাদের আশা।
সঞ্জিত তাঁর বসবাস এলাকায় কোয়াক ডাক্তার বলেই পরিচিত। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মতুয়া সম্প্রদায়ের এক পরিচিত মুখ। মতুয়া আন্দোলনের সঙ্গেও তিনি যুক্ত। তাই কৃষ্ণনগর লোকসভা থেকে ভালো পরিমাণ মতুয়া ভোট পাওয়া নিয়েও তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। শুধু তাই নয়, নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটের স্বার্থে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে মতুয়াদের ব্যবহার করা নিয়েও তিনি সরব হচ্ছেন। এমনকী আগামী দিনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিধানসভা ভিত্তিক মতুয়া প্রার্থী করা হতে পারে বলেও তিনি জানান। মতুয়া ভোট বিজেপিতে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মতুয়াদের একটা বড় অংশের আশা ছিল, বিজেপিকে ভোট দিলে CAA-র মাধ্যমে তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। এর ফলে তাঁদের দীর্ঘদিনের উদ্বাস্তু তকমা মুছে যাবে। কিন্তু CAA আইন যে পাস হল, তাতে আমাদের আশা পূরণ হবে না। উল্টে আমাদের নিজেদেরকেই অনুপ্রবেশকারী শংসাপত্র দিতে হচ্ছে। মতুয়ারা এখন বিজেপির এই কৌশল ধরে ফেলেছে।’